শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জনবলসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, লোকবল ও অবকাঠামোর অভাব সহ নানা সমস্যার মধ্যেই চলছে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রম। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালের জন্য নির্মিত একটি ভবনেই চলছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার হলেও জনবল সংকট রয়েছে। ৫০০ শয্যা হাসপাতালের অবকাঠামোও নির্মাণ শেষ হলে আর সমস্যা থাকবে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট ‘জয়দেবপুর থানা হেলথ কমপ্লেক্স’ নামে হাসপাতালটির যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে একই ভবনে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট থানা হেলথ কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে ‘জেলা সদর হাসপাতাল, গাজীপুর’-এ রূপান্তর করা হয়। ভৌত অবকাঠামো ঠিক রেখে এমনকি জনবল না বাড়িয়ে রোগীদের সেবার স্বার্থে ২০০৪ সালের জুলাই থেকে এটাকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০১৩ সালের ২২ আগস্ট ১০০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় রূপান্তরিত করে নাম দেয়া হয় ‘৫০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনালে হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টার, গাজীপুর’। ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর থেকে হাসপাতালের নতুন নামকরণ করা হয় ‘শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর’। পরবর্তীতে তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালের জন্য সম্প্রসারণ করা ভবনেই শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা গেছে, ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি চলছে জনবল সংকট নিয়েই। ৫০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য মঞ্জুরীকৃত ৫০০ পদের মধ্যে বর্তমানে পূরণকৃত পদের সংখ্যা ৪২১টি। আউট সোর্সিং ভিত্তিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কাজ করছে ১৭৪ জন। শূন্য পদের সংখ্যা ৭৯টি। হাসপাতালে ৫০০ শয্যার মধ্যে ৪৪০টি শয্যা রয়েছে। নার্স রয়েছে ২৯০ জন, নার্সের ৭টি পদ শূন্য রয়েছে।

চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মচারীর শূন্য পদে দ্রুত পদায়নের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

জনবল সংকটের কারণে রাতে জরুরি সার্জারী হয় না। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জরুরিসহ অন্যান্য অপারেশন হয়। পর্যাপ্ত অপারেশন থিয়েটার না থাকায় অনেক সময় জরুরি অপারেশন করা সম্ভব হয় না। ফলে মুমূর্ষু রোগীকে ঢাকায় রেফার্ড করতে হয়। বর্তমানে এ হাসপাতালে এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকু, সিবিসি, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, প্রশ্রাব ও পায়খানা পরীক্ষা, সিরাম বিলিরোবিন পরীক্ষা করা হয়। তবে হরমোন পরীক্ষা, রক্তের কোলেস্টোরেল পরীক্ষা, ব্লাড কালচার, হিস্ট্রোপ্যাথলজির মতো পরীক্ষা করা হয় না। হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ ও রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা ২৪ ঘন্টা চালু থাকে। স্থান ও শয্যার অভাবে অনেক রোগীকে বারান্দার মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। বাসস্থানের অভাবে প্রায় সব চিকিৎসকই হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করেন। শুধুমাত্র আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাসপাতালের চিকিৎসক কোয়ার্টারে স্ব-পরিবারে থাকেন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে প্রায় এক হাজার ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ রোগী আসে। ১৬ শতাধিক রোগীর ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা দিতে প্রতি পদের বিপরীতে আরো চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর