শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

খুলনায় আঠারো বেঁকি নদীর পুনঃখননে নতুন প্রত্যাশা

৪৩ হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধতামুক্ত খুশি এলাকার মানুষ, বাড়বে কর্মসংস্থান

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় আঠারো বেঁকি নদীর পুনঃখননে নতুন প্রত্যাশা

সীমানা বিরোধের কারণে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা খুলনার আঠারো বেঁকি নদীর পুনঃখনন কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। এই নদী খননের ফলে খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইলের প্রায় ৪৩ হাজার হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধতামুক্ত হবে। পাশাপাশি এলাকার মানুষ তাদের কৃষিজমিতে চাষাবাদ ও সেচকাজে মিষ্টি পানি ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার নদীর শেষ অংশে খননের কাজ চলছে। এরপর প্রকল্পের আওতায় নদীর দুই পাড়ে বৃক্ষ রোপণ করা হবে। জানা যায়, নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৩ সালে ২৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয় একনেকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২০১৬ সালে আঠারো বেঁকি নদীর ৪৯ কিলোমিটার জায়গা পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। তবে খুলনা-বাগেরহাট জেলার সীমানা বিরোধে নদীর ৩ কিলোমিটার জায়গার খনন কাজ স্থগিত রাখা হয়। পরে মতবিরোধের নিষ্পত্তি হওয়ায় গত বছরের নভেম্বরে শুরু হয় পুনঃখনন কাজ। পানি উন্নয়ন বোর্ড, খুলনা-১ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, নদীতে পলি পড়ে নাব্যতা হারানোর ফলে বন্ধ হয়ে যায় নৌযান চলাচল। নদীর অনেক জায়গায় এখন ধান চাষ হতো। বর্তমানে নদীটি আড়াআড়ি প্রায় ১৫০ ফুট ও ২০-২৫ ফুট গভীর করে পুনঃখনন করা হচ্ছে। এতে তিন জেলার ১৩টি বিলের প্রায় ৪৩ হাজার  হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধতামুক্ত হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে খুলনার রূপসা উপজেলার কাছাকাছি নন্দনপুরে নদীর মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে নদীর মুখ উন্মুক্ত করা হবে। এতে জলাবদ্ধ জমির পানি নদীতে নেমে যাবে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে সীমানা বিরোধ ছিল। নদী পুনঃখননের ফলে স্থায়ীভাবে সীমানা বিরোধের অবসান হবে। সেই সঙ্গে খননকৃত নদীর পানি মানুষ চাষাবাদ ও গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহার করতে পারবে। এদিকে খননকৃত এই নদীর পানি ‘মিষ্টি পানির বড় রিজার্ভার’ হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড, খুলনা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, নদী খননের ফলে লবণাক্ততা কমবে। এতে মানুষ চাষাবাদ, মৎস্য উৎপাদন, হাঁস পালন করতে পারবে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

 

সর্বশেষ খবর