রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বাঁচানো গেল না সেই রিপাকে

গাজীপুর প্রতিনিধি

টানা পাঁচ মাস মৃত্যুযন্ত্রণায় ভুগে গতকাল মারা গেছেন বিচার না পাওয়া কালীগঞ্জের সেই জেসমিন আক্তার রিপা (২০)। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় এলাকার বিল্লাল ফরাজি তাকে জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। টেনেহিঁচড়ে নিয়ে বেদম পিটুনি দিয়ে লাঞ্ছিত করেছিল। এর বিচার না পেয়ে গত ১০ আগস্ট বিষপান করেছিলেন রিপা। রিপা গাজীপুরের কালীগঞ্জের বড়গাঁও দরিদ্র রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সন্ত্রাসী বিল্লাল একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।

রিপার মা নূরজাহান বেগম বলেন, তার স্বামী রফিকুল ইসলাম গাছ কাটা শ্রমিক। তার এক ছেলে, দুই মেয়ে। সন্তানদের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন রিপা। বেশ কিছুদিন ধরেই বিল্লাল ফরাজি পথেঘাটে তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিল। বিল্লাল বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তার বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণ ও হত্যা মামলা রয়েছে।

১০ আগস্ট দুপুরে রিপার বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের দিন ধার্য হয় ১৪ আগস্ট। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয় বিল্লাল। রিপা বিকালে বাড়ির পাশের সড়কে গেলে বিল্লাল তাকে প্রকাশ্যে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে। রিপা চিৎকার দিলে চড়-লাথি মেরে তাকে লাঞ্ছিত করে। এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বিল্লালের চাচা হেকিম ফরাজির কাছে বিচার দাবি করেন। কিন্তু সেখানে রিপা বিচার পাননি। অবশেষে রিপা সবার অজান্তে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

নূরজাহান বেগম আরও বলেন, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে বিল্লাল ফরাজি, তার বাবাসহ সাতজনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছিলেন। ঘটনার পর বিল্লাল মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। অন্য আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে শুরু করে। তারা এক প্রকার জিম্মি অবস্থাতেই ছিলেন। এরই মধ্যে গতকাল ভোরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রিপা। তিনি মেয়ে হত্যায় প্ররোচনা দানকারীদের ফাঁসি দাবি করেন।

সর্বশেষ খবর