বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

অস্তিত্ব সংকটে শালবনের বানর

বিদ্যুতের তারে পুড়ছে শরীর, নেই চিৎকার লাফালাফি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

অস্তিত্ব সংকটে শালবনের বানর

মধুপুর শালবনে হাত ও মুখ ঝলসে যাওয়া বানর

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সন্তোষপুর গ্রাম। গ্রামটি জুড়ে রয়েছে মধুপুরের শালবনের বিশাল অংশ। স্থানীয়দের ভাষ্য, পাঁচ দশক আগেও বনে ছিল বাঘ, হরিণ, বন্যশূকর, হনুমান। সব হারিয়ে  এখন হাতেগোনা কিছু হনুমান ও তিন শতাধিক বানর রয়েছে এ বনে। হনুমান-বানর দেখতে প্রতিদিন এখানে ভিড় করে পর্যটক। দুই সপ্তাহ ধরে বানরগুলো দেখে পর্যটকদের মন বেজায় খারাপ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দশটির বেশি বানরের দেখা মিলেছে-যাদের শরীর ঝলসানো। কোনোটির হাত-পা, বুক-পিঠ, মুখসহ বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে বিদ্যুতের তারে। এতোদিন কোনোমতে শালবনে বানরগুলোও টিকে থাকলেও এখন পড়েছে অস্তিত্ব সংকটে। পোড়া ক্ষতের কারণে দলবদ্ধ বানরগুলোর বাঁদরামিও নেই। সঙ্গীদের এমন অবস্থায় অন্যরাও বিষন্ন। জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর সন্তোষপুর বনাঞ্চলের আশপাশে ও বিট অফিসে পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ উদ্বোধন করেন মোসলেম উদ্দিন এমপি। তিনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের বন এলাকার ভিতরে সিলভারের তারের পরিবর্তে কভারিং কেবল দিয়ে লাইন টানার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ এ নির্দেশ মানেনি। এখন তার খেসারত দিচ্ছে বানরগুলো। অভিযোগ আছে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, ফুলবাড়িয়া জোনাল অফিসকে বিষয়টি জানালেও শুরুতে এ ব্যাপারে তারা ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি বিদ্যুতের লাইন ডিজাইন করার সময়ও ঝুঁকির বিষয়টি ভাবা হয়নি। বানরগুলো ঝলসানোর খবর পেয়ে গত বুধবার ফুলবাড়িয়া জোনাল অফিস সন্তোষপুর বনাঞ্চলে বিদ্যুত লাইনে লোক দেখানো কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বনের ভিতরে বিদ্যুতের কভারিং তার না দেওয়ায় বন্য প্রাণি ঝুঁকির মধ্যেই রয়ে গেছে বলে মনে করছে বন বিভাগ ও স্থানীয়রা। ফুলবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) অনিতা বর্ধন বলেন, ‘এইচটি লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বানররা যাতে আহত না হয়, সেভাবেই বিদ্যুতের লাইনের কাজ চলছে।’ সন্তোষপুর বিট কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান খান বলেন, ‘কভারিং তার ব্যবহার না করে শুধু সিলভারের দুই তারের মাঝখানে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়ে কাজ শেষ করা হয়েছে। এতে প্রাণিদের ঝুঁকি রয়েই গেল।’

সর্বশেষ খবর