শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নির্যাতনের শিকার শিশু

নাটোর প্রতিনিধি

নির্যাতনের শিকার শিশু

জেলার লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের ঢুষপাড়া আকবরপুর গ্রামে জিনকে দেওয়ার নামে পাঁচ বছরের শিশু সন্তান হোসাইনকে নির্মম নির্যাতন করেছেন মানসিক ভারসাম্যহীন মা রানু বেগম (৩৫)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, শিশু হোসাইনের মা রানু বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন। সম্প্রতি হোসাইনকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ি আকবরপুরে বেড়াতে যান। সেখানে গত মঙ্গলবার রানুর কাছে তার একমাত্র ভাই মিলনকে কথিত জিন নিয়ে যেতে চাইলে ভাইয়ের পরিবর্তে নিজ সন্তান হোসাইনকে দিয়ে দিতে চান তিনি। তবে ছেলেকে জিনের কাছে দিলে হত্যা করে দিতে হবে-এমন বিশ্বাসে হোসাইনকে হত্যার চেষ্টা করেন রানু। শুরু হয় আদিম নির্যাতন। ওই দিন সন্ধ্যায় প্রথমে হোসাইনকে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে মারার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন রানু। এরপর রাতভর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আগুনের ছেঁকা, পেরেক দিয়ে শরীর খামচানো, লাঠিপেটা এবং সবশেষ পাকা দেয়ালের সঙ্গে মাথা চেপে ঘষা দিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন তিনি। বুধবার সকালে আবারও নির্যাতন শুরু করলে হোসাইনের চিৎকার চেঁচামেঁচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে মারধর বন্ধ করতে মাকে অনুরোধ জানায়। অনুরোধ না শুনলে একপর্যায়ে দরজা ভেঙে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রাজ্জাক জানান, মায়ের দ্বারা এমন নির্যাতনের কারণে শিশু হোসাইন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা নিবিড়ভাবে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য কফিল উদ্দীন জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে রানু সন্তানের উপর নির্যাতন চালাতে পেরেছে। এই কাজে পরিবারের অন্যদের স¤পৃক্ততা নেই।

লালপুর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, ইউপি সদস্যসহ স্থানীয়রা রানু বেগমকে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সুস্থ হবার পর শিশুটিকে মায়ের থেকে আলাদা রাখার আশ্বাস দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর