বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বিভিন্ন স্কুলে ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায়

কুমিল্লায় সেশন ফির নামে বাণিজ্য

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি বেসরকারি হাই স্কুলে ভর্তির নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। পুনঃ ভর্তির ক্ষেত্রেও একইভাবে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে চলতি শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সেশন ফির নাম করে বাণিজ্য করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ছাত্রীদের কাছ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। পুনঃভর্তির ক্ষেত্রেও একই ফি আদায় করা হয়। চান্দিনা পৌরসভার সাহাপাড়া এলাকার অভিভাবক ধনঞ্জয় মজুমদার ও চান্দিনা পশ্চিম বাজার এলাকার অভিভাবক আমেনা আক্তার জানান, তাদের সন্তানদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা করে নিয়েছে ওই বিদ্যালয়। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ের পৌরসভাধীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুমিতা রায় বলেন, ‘ভর্তি ও সেশন ফি এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’ অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রমাণ রয়েছে বললে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত না বেতন হিসেবে নেওয়া হয়েছে।’ বড় গোবিন্দপুর আলী মিয়া ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভর্তি ও সেশন ফি মিলিয়ে এক হাজার ২৬০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা নিচ্ছে বিদ্যালয়টি। পুনঃভর্তির ক্ষেত্রেও একই চিত্র। বড় গোবিন্দপুর আলী মিয়া ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. জাকির হোসেন খান বলেন- ‘আমি কোনো তথ্য দিতে পারবো না। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে সব তথ্য দেওয়া আছে।’ মাধাইয়া বাজার ছাদিম উচ্চ বিদ্যালয়ে নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি ও সেশন ফি মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও এক হাজার টাকা করে নিয়েছে বিদ্যালয়টি। পুনঃভর্তির ক্ষেত্রেও এক হাজার টাকা করেই নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদায় করা অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়। উপজেলার বাড়েরা উচ্চ বিদ্যালয়, মহিচাইল উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি হাইস্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই প্রতিষ্ঠানগুলোও অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কানিজ আফরোজ জানান, ‘পৌর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তি ও সেশন ফি মিলিয়ে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা নিতে পারবে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন- ‘পুনঃভর্তির জন্য কোনো টাকা নেওয়ার বিধান নেই।’ চান্দিনার ইউএনও স্নেহাশীষ দাশ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর