রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নগরকান্দায় কর্মসৃজন প্রকল্পে লুটপাট

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

নগরকান্দায় কর্মসৃজন প্রকল্পে লুটপাট

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ও ডাঙ্গী ইউনিয়নে কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কর্মহীন মানুষের কাজের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে সরকার ৪০ দিনের প্রকল্প চালু করলেও শ্রমিকের তালিকায় রয়েছে অনেক বিত্তশালীর নাম। অনেক জায়গায় আবার নির্ধারিত শ্রমিকের চেয়ে কম সংখ্যক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।

উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কর্মহীন প্রান্তিক শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এতে সপ্তাহে পাঁচ দিন সরকারিভাবে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে মাটি কাটার কথা। যার কাজ গত ২৩ নভেম্বর শুরু হয়ে ১৮ জানুয়ারি তারিখে শেষ হয়। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ২২টি প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ৫০৩ জন তালিকাভুক্ত শ্রমিকের অনুকূলে এক কোটি ২০ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ৪০ দিন কাজের বিনিময়ে প্রত্যেক শ্রমিক আট হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা। প্রকল্প চলাকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরাপাড়া ইউনিয়নের দুলালী বটতলা থেকে আসাদের বাড়ি রাস্তা নির্মাণে ৭৪ শ্রমিকের জন্য ৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এই রাস্তায় ৭৪ জনের স্থলে কাজ করেছেন ৫৩ জন শ্রমিক। অন্য একটি প্রকল্পে বড় কাজলী রাকিব মিয়ার বাড়ি থেকে হাসেম শেখের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৪ লাখ টাকা। সেখানে ৫০ শ্রমিকের স্থলে ৩১ জনকে কাজ করতে দেখা গেছে। একই অবস্থা ডাঙ্গী ইউনিয়নের খৈয়া থেকে শ্রীরামদিয়া খালপাড় এবং ডাঙ্গী জামে মসজিদ থেকে ডাঙ্গী বেড়িবাধ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের। কর্মরত শ্রমিকরা জানান, প্রথম দিন থেকে নির্ধারিত শ্রমিকের চেয়ে কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের তথ্য সংশ্লিষ্ট সাইনবোর্ড থাকার কথা। কিন্তু উপজেলার কোথাও প্রকল্পের সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন দফতর ম্যানেজ করে ইউপি চেয়ারম্যান, প্রকল্পের সভাপতি ও সদস্যরা অর্থ আত্মসাত করতে খাতা-কলমে শতভাগ শ্রমিক উপস্থিতি দেখিয়ে বাস্তবে কম শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। প্রকল্প সভাপতিরা জানান, চেয়ারম্যানের নির্দেশমতে তারা কাজ করাচ্ছেন।

প্রকল্পে কতজন শ্রমিক কাজ করার কথা তারা জানেন না। নগরকান্দা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইকবাল কবির বলেন, ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি। অফিসে আসেন, সাক্ষাতে কথা হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর