রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কেমনে তিনি এই ভার বইবেন!

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কেমনে তিনি এই ভার বইবেন!

মা হারা দুই নাতি আর প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে অভাব-অনটনে দিন কাটে গীতা মজুমদারের -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুমিল্লার দেবিদ্বারের পশ্চিম পোমকাড়া গ্রাম। গ্রামের বিশ্বম্ভর মজুমদার পাশের এগার গ্রাম বাজারের নাইটগার্ড ছিলেন। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। তিনি অনেক বছর আগে মারা গেছেন। তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। এক ছেলে শ্রমিক। আরেক ছেলে স্বপন চন্দ্র বাজার পরিষ্কার করতেন। তার পায়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটেন। সম্প্রতি স্বপনের মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় ছোট দুটি ছেলে-মেয়ে রেখে স্ত্রী চলে গেছেন। স্বপনের মা ৭০ বছরের গীতা মজুমদার। তিনি ছেলে স্বপন ও দুই নাতির দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন। স্বপনের ছেলে শান্তর বয়স ১০ বছর। মেয়ে প্রীতির বয়স ৪ বছর। শান্ত কিছুদিন স্কুলে গেলেও এখন পড়ালেখা বন্ধ। বৃদ্ধা মা আর প্রতিবন্ধী ছেলে মানুষের কাছে হাত পেতে যা পান তা দিয়ে পরিবার চলে।

তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া একটি ছোট ঘর। মাটিতে বসিয়ে দুই নাতিকে খেতে দিয়েছেন গীতা মজুমদার। ভাত আর কিছু কুড়িয়ে আনা পাতা। শিশুরা খেতে চায় না। গীতা মজুমদার শিশুদের সঙ্গে রেগে যান। বলেন, ‘বুড়া বয়সে আমার অইছে যত জ্বালা। পোলা পাগল মানু। ছোডু পোলাপাইনডি হালাইয়া তাগো মা চইলা গেছে। একটা ঘর নাই। খানা নাই। বুড়া বয়সে কোনহানে যাব। কোনো ভাতা টাতা পাই না। একখান ঘর পাইনা। একজন ভাতা দিবে বইলা ১ হাজার টেয়া নিছে। কিন্তু ভাতা পাইনি।’ তাদের প্রতিবেশী কলেজ শিক্ষার্থী শরীফ বলেন, ‘আর কত খারাপ অবস্থায় পড়লে গীতার পরিবার ভাতা পাবে? তাদের একটি ঘরেরও খুব প্রয়োজন।’ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, ‘নতুন ভাতার কার্ড পেলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।’ দেবিদ্বার উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা  আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যোগযোগ করলে তাদের ভাতার ব্যবস্থা করে দেব।’ দেবিদ্বার উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ বলেন, ‘হতদরিদ্রদের ঘর দেবিদ্বারে আসেনি। নতুন প্রকল্প আসলে সহযোগিতা করা হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর