নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর রানীনগর অংশের নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধ সংস্কারে ৪০ বছরেও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ধীরে ধীরে বাঁধটি ভেঙে ও মাটি ধসে জমির আইলের মতো সরু হয়ে গেছে। জানা গেছে, আশির দশকে গোনা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আহাদ আলী খাদ্যের বিনিময়ে কর্মসূচির আওতায় নান্দাইবাড়ী এলাকায় প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা কাম বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। এরপর থেকে প্রায় ৪০ বছর ধরে বাঁধটির সংস্কার হয়নি। প্রতি বছর ওই স্থানে বাঁধ ভেঙে রানীনগর এবং আত্রাই এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমির ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও চাষকৃত মাছ ভেসে যায়। এ ছাড়া শত শত বসতি ভেঙে পড়ে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, বরাদ্দ আসলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে।
ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম, আবদুস সালাম, মজিবুর রহমানসহ অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন বাঁধটি সংস্কার না করায় এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা এলেই কর্মকর্তারা বাঁধ রক্ষায় তোড়জোড় শুরু করেন। কিন্তু পানি নেমে গেলে কারও খোঁজ পাওয়া যায় না। ২০১৮ সালে বন্যায় নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে নওগাঁ-আত্রাই পাকা সড়কের রানীনগর সীমানার মিরাপুর, ঘোষগ্রাম, কৃষ্ণপুরসহ প্রায় ৫ জায়গায় ভেফু যায়। ওই বছরই বন্যায় উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। গত বছর একই স্থানে বাঁধ ভেঙে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়। প্রতি বছর একই স্থানে ধারাবাহিকভাবে বাঁধ ভেঙে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলেও নতুন করে বাঁধ নির্মাণে কিংবা সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ।
গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান জানান, বাঁধটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পর্যন্ত ধরনা দিয়েছি কিন্তু লাভ হয়নি। কারণ বাঁধটি কোন দফতরের। কে এই বাঁধের অভিভাবক তা কেউ বলতে পারে না। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, নান্দাইবাড়ী-কৃষ্ণপুর বেড়িবাঁধটি আমাদের আওতায় নয়। তবে সংস্কারে যদি বিশেষ কোনো নির্দেশনা বা বরাদ্দ আসে তাহলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে।