মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

আতঙ্কের জনপদ বালিদিয়া

খুন হামলা মামলায় পুরুষশূন্য গ্রাম

মাগুরা প্রতিনিধি

একটি হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন আতঙ্কের জনপদ মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রাম। একদিকে একাধিক মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য গ্রাম। অন্যদিকে প্রতিপক্ষের হামলা, লুটপাটের ভয়ে প্রতিদিনই বাড়ি ছাড়া হচ্ছে কোনো না কোনো পরিবার। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অনেকে আশ্রয় নিয়েছে স্বজনবাড়ি। মাঠে কাজ করতে না পারায় পরিত্যক্ত পড়ে আছে বহু ফসলি জমি। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, বালিদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ মিনা এবং বালিদিয়া গ্রামের ইউনুস শিকদারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। মফিজ মিনার সমর্থক সাবেক পুলিশ সদস্য আবু সাঈদ সম্প্রতি ইউনুস শিকদারের দলে যোগ দেওয়ায় দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়। আবু সাঈদ গত ১৩ জানুয়ারি প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘর, খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হত্যার পর গণগ্রেফতার ও প্রতিপক্ষের হামলা থেকে বাঁচতে মফিজ মিনার সমর্থকরা এলাকা ছাড়া হন। অন্যদিকে ইউনুস শিকদার সমর্থকরা মফিজ মিনা সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলায় তাদের প্রায় ৩৫০ জনের নামে মামলা হয়। ফলে উভয় পক্ষই এখন গ্রামছাড়া। সরেজমিনে গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বৃদ্ধ নারী ও শিশুরা বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছেন। তাদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। খেতখামারে চাষবাস বন্ধ। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকার দোকানপাট বন্ধ। বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কম। রাস্তায় তেমন লোকজন-যানবাহন নেই। মহম্মদপুর-শালিখা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবির হাসান শুভ্র জানান, গত ১৩ জানুয়ারি খুনের ঘটনার পর হামলা ভাঙচুরের পাশাপাশি ৩৭ জনের নামে মামলা হওয়ায় দুই পক্ষই থেমে ছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি মফিজ মিনার কিছু লোককে ইউনুছ শিকদারের দলে যোগদান করিয়ে রাতে খাওয়া-দাওয়া হয়। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে ইউনুছ শিকদারের লোকেরা নতুন করে মফিজ সমর্থকদের আরও কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করে। পুলিশ তাদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। হত্যা, ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর