পঞ্চগড় জেলার যেখানে-সেখানে গড়ে উঠছে অবৈধ ইটভাটা। এ সব ভাটার কলো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে কৃষি ও পরিবেশ। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী। সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিয়ম-নীতি না মেনেই গড়ে তোলা হচ্ছে ভাটা। প্রতিবছর পঞ্চগড়ে নতুন নতুন ইটভাটা স্থাপন করা হলেও অধিকাংশ ভাটার জেলা প্রশাসন থেকে লিখিত ছাড়পত্র নেই। নেই পরিবেশ অধিদফতরসহ অন্য অনুমোদনও। এছাড়া আবাদী জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ইট বানানোর ফলে নষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি। স্কুল-কলেজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে থাকা এ সব ইটভাটার ধুলোবালি-কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। প্রতিটি ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট। কালো ধোঁয়া ও আগুনের তাপে মরছে আশপাশের গাছপালা। ভাটার কাছাকাছি জমিতে হচ্ছে না কোনো ফসল। পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু হানিফ বলেন, ফসলি জমিতেই ইটভাটা হচ্ছে। এই এলাকার মাটি বেলে-দোআঁশ। তাই টপ সয়েলেই ফসল ভালো হয়। কিন্তু সেই টপ সয়েলই কেটে নিয়ে ইটভাটায় যাচ্ছে। ফলে আবাদ কমছে। পঞ্চগড়ে ঠিক কতোগুলো অবৈধ ইটভাটা আছে তার সঠিক হিসাব জেলা প্রশাসনের কাছেও নেই বলে জানান তিনি। বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলায় শতাধিক ইটভাটা থাকলেও জেলা প্রশাসনের কাছে মাত্র ২৪টি ভাটার খোঁজ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছয়টি পরিবেশগত ছাড়পত্র থাকলেও তা নবায়ন হয়নি কয়েকবছর। জেলায় পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন অ্যাডভোকেট আবু বকর ছিদ্দিক। তিনি বলেন- ইটভাটা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানছে না মালিকরা। জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে, এটা আশা করা যায় না। জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, অনেক ভাটামালিক অনুমোদনের আবেদন করেছেন। কয়েকটির ছাড়পত্র আছে। অবৈধ ভাটা বন্ধে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।