রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সামর্থ্যবানরা পেয়েছেন ঘর নেওয়া হয়েছে উৎকোচ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

সামর্থ্যবানরা পেয়েছেন ঘর নেওয়া হয়েছে উৎকোচ

আধাপাকা এই ঘরের মালিককে দেওয়া হয়েছে সরকারি ঘর বরাদ্দ

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সম্রাট। বাড়িতে তার একটি আধাপাকা ঘর রয়েছে। তিনি পেয়েছেন সরকারি অর্থে ঘর বরাদ্দ। প্রায় এক মাস আগে ঘরের নির্মাণ কাজও শেষ হয়েছে।

আধাপাকা ঘর থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ঘর বরাদ্দ পেলেন- এ প্রশ্নের জবাবে সম্রাট জানান, আধাপাকা ঘরটি বাবার নামে। তার মামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি। মামার মাধ্যমেই সরকারি ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। মামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা মাস্টার বলেন, ‘তিনি কোনো তদবির করেননি। সম্রাট নিজেই তদবির করে ঘর পেয়েছেন। সম্রাট মাছ বিক্রি করে সংসার চালায়। সে একটা ঘর পেতেই পারে।’ স্থানীয় সূত্র জানায়, ১০ শতাংশ বসতভিটায় সম্রাটের একটি আধপাকা ঘরের পাশাপাশি কৃষি জমি রয়েছে ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া বন্ধকী জমি আছে তিন বিঘা। এর মধ্যে দুই বিঘায় ফিশারি এবং এক বিঘায় কৃষি কাজ করেন। একই ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামের আজিদ ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। আজিদের চার শতাংশ বসতবাড়িতে দোচালা টিনের ঘর রয়েছে। তার কৃষি জমি আছে দুই কাঠা। তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাগ্নে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘আজিদের শুধু চার শতাংশ বসতবাড়িতে একটি দোচালা টিনের ঘর আছে। আর কোনো সহায় সম্পদ নেই। জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ টিআর কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়। যাদের চার শতাংশ জমি রয়েছে, কিন্তু ঘর করার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য সরকার বাসস্থান নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। অথচ কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় যাদের সামর্থ্য আছে- এমন লোকদেরই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে ঘর বরাদ্দের ক্ষেত্রে ঘুষ নেওয়ারও। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ২৫টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর বেশিরভাগই প্রকৃত ভুক্তভোগীরা পায়নি। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাদির মিয়া জানান, এ প্রকল্পের কাজ তার সময়ে হয়নি। এর পরও কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর