রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের নামে লুট

কুমিল্লার প্রাথমিক বিদ্যালয়

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের নামে সরকারি টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। কোথাও মেশিন স্থাপনের নামে ‘স্লিপ গ্র্যান্ড’ নামের স্কুলের ফান্ড থেকে ১৬-৩৩ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। চার পাঁচ গুণ বেশি দামে এই মেশিন ক্রয় করা হয়। কোথাও ৯ মাস আগে মেশিন স্থাপন করা হলেও তার ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষকরা কিছুই জানেন না। মেশিনটি সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়নি। মেশিনটির কার্যক্রম না থাকায় শিক্ষকদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারছে না ঊর্ধ্বতন অফিস। স্কুল সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মেশিন কেনার কথা থাকলেও তা উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মতামতের মূল্য দেওয়া হয়নি। মেশিনের মেয়াদ এক বছর থেকে ১৫ মাস। স্কুলের দেয়ালে ঝুলে তার মেয়াদ ৯ মাস শেষ হয়ে গেছে। অনেক মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সূত্রমতে কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় ২ হাজার ১৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে শুধু সদর উপজেলার প্রায় সব স্কুল সার্ভারের আওতায় এসেছে। অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, তিতাস, হোমনা, দাউদকান্দি, লাকসাম, বরুড়াসহ কয়েকটি উপজেলায় মেশিন ক্রয়ের বিষয়ে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা কেউ মুখ খুলতে চান না। তারা বলেন, সব স্কুল কমিটি জানে। তবে স্কুল কমিটি বলছে তাদের কিছু জানানো হয়নি। বুড়িচং উপজেলার জয়নাল আবেদীন নামে এক ব্যক্তি মেশিন ক্রয় নিয়ে দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন। দুদক এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক  সেলিম তার স্কুলের মেশিনটি চালুর বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর দরখাস্ত দিয়েছেন। মেশিনটি কোনো কাজে লাগছে না। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম মুন্সী বলেন, এখনো মেশিনটি সার্ভারে সংযুক্ত হয়নি। ব্রাহ্মণপাড়ার ১০৮টি স্কুলে মেশিন সরবরাহকারীদের একজন সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি উজ্জ্বল চন্দ্র শীল বলেন, আমি একা নই আরও কয়েকজন মেশিন দিয়েছে। আমি মেশিনপ্রতি ১৬ হাজার টাকা করে নিয়েছি। অন্যদের বিষয়ে বলতে পারব না। দাউদকান্দি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এগুলো আমরা জানি না। স্কুল কমিটি নিজেরা মেশিন ক্রয় করেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, শুধু সদরের অধিকাংশ স্কুল সার্ভারের আওতায় এসেছে। স্কুল কমিটির মেশিন ক্রয়ের নিয়ম রয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর