বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ফরিদপুর পৌরবাসী

ফরিদপুর প্রতিনিধি

করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই নতুন করে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুর শহরের সর্বত্র বেড়েছে মশার উপদ্রব। দিনের বেলায়ও রেহাই মিলছে না মশার কবল থেকে। বর্তমানে মশার উপদ্রব নিয়ে ফরিদপুর পৌরবাসী দিশাহারা অবস্থায় রয়েছে।। শীত মৌসুম শেষ হতে না হতেই ফরিদপুরে এ বছর মশার উপদ্রব ক্রমে বেড়েই চলেছে। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে মশার আক্রমণে ঘুম নেই পৌরবাসীর। শহরের ঝিলটুলী, নিলটুলী, পূর্বখাবাসপুর, আলিপুর, কমলাপুর, চরকমলাপুর, টেপাখোলা, দক্ষিণ ঝিলটুলী, গোয়ালচামট, রথখোলা, অম্বিকাপুর অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। আর এসব এলাকার বিভিন্ন পুকুর, ডোবা, ড্রেনসহ অর্ধশতাধিক স্থান এখন মশা তৈরির কারখানায় রূপান্তরিত হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের ঝিলটুলী জুবিলী ট্যাংক পুকুরের একপাশে পানি আটকে রেখে গোসলের জন্য ঘাটলা তৈরির কাজ চলছে। অথচ দীর্ঘদিন পানি আটকে রাখার ফলে সেখান মশার লার্ভা থেকে লাখ লাখ মশা জন্ম নিচ্ছে। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন ড্রেনে দীর্ঘদিন পানি আটকে থেকে সেখানেও যেন মশার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে আবারও মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার পরও এখনো মশা নিধনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। থানার মোড়ের ব্যবসায়ী তারিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধনের জন্য পৌরসভার লোকজন ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে ফগার মেশিন দিয়ে রাস্তার ওপর এক দিন ওষুধ দিয়ে চলে গেছে। এভাবে ফাঁকা রাস্তায় ওষুধ দিয়ে কোনো লাভ নেই। ওষুধ দিতে হবে ড্রেন, বিভিন্ন পুকুরে। অথচ তা না করে রাস্তা দিয়ে এক দিন ফগার মেশিনের ধোঁয়া দিয়ে চলে গেছে। এভাবে কোনো মশা মারা সম্ভব নয়। শহরের পূর্বখাবাসপুরের মজনু শেখ বলেন, গত বছরও আমাদের এলাকায় কোনো মশা নিধনের কার্যক্রম চালায়নি পৌরসভা। এ বছর মশার কামড়ে বাড়িতে টিকতে পারছি না। কিন্তু এখন পর্যন্ত পৌরসভার লোকজন মশা নিধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়লে তো এবার নিস্তার নেই।

এদিকে, মশার হাত থেকে বাঁচতে নিজ উদ্যোগে মশা নিধনের কার্যক্রম চালাচ্ছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবীরা। পৌর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আলিপুর এলাকার মানুষকে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে নিজ উদ্যোগে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুকুর, ডোবা, খাল, ঝোপ-ঝাড়ে মশা নিধনের কার্যক্রম চালাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোক্তা জাবির শফি দিনার জানান, গত বছর ডেঙ্গু মশার ভয়াবহতা দেখেছি। অনেক মানুষ ডেঙ্গু মশার কামড়ে মারা গেছে। এ বছরও মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। আর এই ডেঙ্গু মশার হাত থেকে রক্ষার্থে বিভিন্ন মহল্লায় গত ৬ মাস ধরে মশা নিধনের কার্যক্রম চালাচ্ছি। এ সময় তিনি আরও জানান, তাদের মশা নিধনের এ কার্যক্রম পুরো বর্ষা মৌসুমজুড়েই চলবে।

এদিকে, পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, আমরা শহরকে পরিষ্কার রাখার জন্য কাজ করছি। এ বিষয়ে জনসচেতনতার জন্য মাইকিং চলছে। তাছাড়া ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর