সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ

জেলার ক্লিনিক্যাল বর্জ্য কোথায় যাচ্ছে জানে না কেউ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ

ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানে না তাদের ক্লিনিক্যাল বর্জ্য যাচ্ছে কোথায়। তাদের উদাসীনতা আর স্বেচ্ছাচারিতায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে জেলা শহরের সাধারণ মানুষ।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা-বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮ প্রজ্ঞাপন মোতাবেক ‘চিকিৎসা-বর্জ্য’ মানুষের চিকিৎসা, প্রতিষেধক ব্যবস্থা, রোগনির্ণয় বা রোগ সংক্রান্ত গবেষণার ফলে উৎপাদিত যে কোনো কঠিন, তরল, বায়বীয় ও তেজষ্ক্রিয় পদার্থ যা নির্গত, নিক্ষিপ্ত বা বাষ্পীকৃত হয়ে পরিবেশের ক্ষতিকর পরিবর্তন সাধন করে। সুনির্দিষ্ট আইন ও নির্দেশনা থাকলেও জেলার কোনো সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, কনসালটেশন চেম্বার, ক্লিনিক, নার্সিংহোম, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, ডিসপেনসারি, ওষুধের দোকান তাদের চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার চিকিৎসা-বর্জ্য ফেলা হচ্ছে হাসপাতাল সীমানার মধ্যেই উন্মুক্ত স্থানে। সেখানে অবাধে বিচরণ করছে গরু-ছাগল, কুকুর, বিড়াল। ঠোঁটে করে তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় উড়ে যাচ্ছে কাক। আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল আজিজ চপল জানান, ‘হাসপাতালের ইনসিনেরেশন কক্ষটি (বর্জ্য ধ্বংস করার কক্ষ) ৭-৮ বছর ধরে নষ্ট। আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরে বহুবার জানিয়েছি। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বর্জ্য পোড়ানো হয়।’ সদর হাসপাতালের কাছাকাছি রয়েছে কয়েকটি ক্লিনিক। এর একটি ‘প্রাইম হাসপাতাল’। এ হাসপাতালের ম্যানেজার ফারুক হোসেন ও মার্কেটিং সেক্রেটারি রেজাউল জানান, হাসপাতালের বর্জ্য আমাদের সুইপার ভ্যানে করে নিয়ে যায়। সেগুলো তারা কোথায় ফেলে তা আমরা জানি না। আরও কয়েকটি ক্লিনিক ঘুরে একই তথ্য পাওয়া যায়। ঠাকুরগাঁও জেলার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো থেকে প্রতিদিন কী পরিমাণ চিকিৎসা-বর্জ্য নির্গত হচ্ছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে। জেলার সচেতন মানুষ মনে করেন অবিলম্বে চিকিৎসা-বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে ইনসিনেরেশনে পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করাসহ ক্লিনিক্যাল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট তৈরি করা হোক।

সর্বশেষ খবর