শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

তালাবদ্ধ ঘরে কিশোরীর লাশ

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামের মাঝগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ির তালাবদ্ধ ঘর থেকে আঁখি খাতুন (১৫) নামে এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তালাবদ্ধ ঘর খুলে পরিবারের সদস্যরা কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে দ্রুত কবর দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা এতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহত কিশোরী আঁখি দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের আব্দুল আলেক মিয়াজীর মেয়ে। প্রতিবেশীরা জানায়, আঁখি খাতুনকে রহস্যজনক কারণে তার বাবা-মা গৃহবন্দী করে রাখে। দীর্ঘ ছয় মাস আঁখিকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখা হয়। ওই ঘরে কোনো লাইট বা ফ্যান ছিল না। সার্বক্ষণিক জানালা-দরজা বন্ধ রেখে আঁখিকে সবার চোখের আড়ালে রাখত। খাবার হিসেবে পাউরুটি, শুকনা রুটি অথবা যৎসামান্য ভাত দরজার চৌকাঠের নিচ দিয়ে দিত। ধারণা করা হচ্ছে খাবার না পেয়ে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আঁখির সঙ্গে বাবা-মা এই আচরণ কেন করতো জানতে চাইলে প্রতিবেশী রাজিয়া বেগম জানান, বিষয়টি তাদের কাছে পরিষ্কার নয়।

 মেয়েটি ব্রাক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার পর মালিপাড়া মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে আর পড়তে দেওয়া হয়নি। তার বাবা-মা সব সময় ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখত। গ্রামে কারও বাড়িতে বা কারও সঙ্গে কথা বলতে দিত না।

আঁখি মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল কিনা জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম জানান, যতদূর জানি ও দেখেছি মেয়েটি সুস্থ ছিল।

তবে আঁখির মা নাসিমা বেগম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আঁখি অসুস্থ ছিল তাই মারা গেছে।   

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর