গুজব আর আজানে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পার করেছে কুমিল্লার লোকজন। রাত ১০টার দিকে ফোন আর ফেসবুকে গুজব ছড়াতে থাকে। কোথায় এক ছেলে জন্ম নিয়ে বলেছে, করোনার চিকিৎসা হচ্ছে চিনি ছাড়া রং চা খাওয়া। তারপরে আজান দিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়। এসব কথা বলেই শিশুটি মারা যায়। কেউ শিশুটির জন্ম কুমিল্লার সুয়াগাজী, কেউ রাজারখলা, কেউ নোয়াখালী বা চট্টগ্রাম বলছে। অনেকে রাত ২টায় পরিবারের সদস্যদের করোনামুক্ত রাখতে ঘুম থেকে তুলে চা পান করিয়েছেন! এদিকে রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন মসজিদে আজান শোনা যায়। পর পর নগরীর পাশাপাশি গ্রামেও সারা রাত মসজিদ ও বাড়িতে আজান হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কিছু অখ্যাত অনলাইন ও ফেসবুক ব্যবহারকারী এসব গুজব ছড়িয়েছে। কেউ লিখেছে আহলে সুন্নাত আল জামাত সংগঠন সব মসজিদে একযোগে আজানের কথা বলেছে। কেউ দেরিতে শুনে রাত ৩টায়ও আজান দিয়েছে।
কুমিল্লা সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা মসজিদের খতিব মাওলানা মো. আবু হানিফ মজুমদার বলেন, বিপদের সময় আজান দেওয়া মোস্তাহাব (ভালো কাজ)। এতে সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ মিলে। শুনেছি আহলে সুন্নাত আল জামাত আজান দেওয়ার কথা বলেছে। শিশুর চা খাওয়ার পরামর্শের বিষয়টি গুজব বলে তিনি জানান। আজানের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আহলে সুন্নাত আল জামাত কুমিল্লা জেলা কমিটির উপদেষ্টা শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, আজান দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমার জানা নেই। হয়তো এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত হতে পারে।
লাকসামেও আজান-নফল নামাজ : লাকসাম প্রতিনিধি জানান, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় কুমিল্লার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটের মসজিদে মসজিদে আজান ও নফল নামাজ আদায় করেছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত আজান ও নফল নামাজ আদায় করা হয়। দেশে মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আজান দিলে আল্লাহ বান্দাদের রক্ষা করেন বলে ইসলামিক স্কলারদের অভিমত। এরই সূত্র ধরে মসজিদে মসজিদে আজান দেওয়া হয়। আজানের পর ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কেউ মসজিদে গিয়ে আবার কেউ বাসায় দুই রাকআত নফল নামাজ আদায় করেন।