প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দমিয়ে রাখতে পারেনি মুন্সীগঞ্জে অবস্থানরত বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দিনমজুরদের। মুন্সীগঞ্জ জেলাটি আলু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। জেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদফরের দেওয়া তথ্য মতে মুন্সীগঞ্জ জেলায় এ বছর ৩৮ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ লাখ মেট্রিক টন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এই আলু উত্তোলন এবং কোল্ড স্টোরেজে পৌঁছানোর কাজে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ২ লাখ নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করে। আলু উত্তোলনের শ্রমিকরা এখন চলে গেছে। রয়ে গেছে আলু পরিবহন শ্রমিকরা। তারা আলু পরিবহনের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। সদর উপজেলার চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি, আধারা, বাংলাবাজার, শিলই, টঙ্গিবাড়ী, উপজেলার যশলং, কামারখাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থানে আলু পরিবহন শ্রমিকরা কাজ করছেন।
শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজশাহী, রংপুর, গাইবান্ধা, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক এ বছর সাইকেল দিয়ে আলু পরিবহন কাজে নিয়োজিত ছিল। সম্প্রতি করোনা আতঙ্কে অনেক শ্রমিক নিজ জেলায় চলে গেছেন।
অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে, গাইবান্ধার মফিজুল, শাহীন, মান্নান, মিন্টু রাজশাহীর মজনু, সাইফুলসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শ্রমিক সাইকেলযোগে আলুর বস্তা নিয়ে ছুটে চলছেন হিমাগারগুলোতে। কৃষকের জমি থেকে একজন শ্রমিক তার বাইসাইকেলে ৫টি করে বস্তা নিয়ে রওয়ানা করেছেন সাইকেল ঠেলে নিয়ে। একজন শ্রমিক প্রতিদিনে ১৫ ট্রিপ মারতে পারেন। আধা ঘণ্টার দূরত্বে বস্তাপ্রতি দাম ২০-২৫ টাকা। এভাবে সারা দিন কাজ করার পর একেকজন শ্রমিক দৈনিক ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় করতে পারেন। বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২ হাজার শ্রমিক এভাবেই প্রতিদিন কাজ করছেন।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহাম্মেদ জানান, সরকার করোনা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। খেটে খাওয়া দিন মজুরদের জন্য প্রচুর পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে সরকার ত্রাণ সামগ্রী ও খেটে খাওয়া মানুষদের পরিবারের জন্য চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। করোনার সংক্রামণ এড়াতে শ্রমিকদের অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। আমরা মাঠে আছি সবাইকে সচেতন করছি।