মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

হুমকির মুখে তাঁতশিল্প

শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

হুমকির মুখে তাঁতশিল্প

করোনার প্রভাবে সিরাজগঞ্জের ব্র্যান্ড তাঁত শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। বন্ধ হয়ে থেকে হাজার হাজার তাঁত কারখানা। থমকে গেছে তাঁতপল্লীর খটখট শব্দ। বেকার হয়ে পড়েছে লাখ লাখ তাঁত শ্রমিক। টানা পাঁচদিন কর্মহীন থাকায় মানবেতরজীবন যাপন করছে তাঁত শ্রমিকরা। অন্যদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা যে ব্যবসার আশা করেছিলেন, তা মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। লোকসানে দিশাহারা হয়ে পড়ছে কারখানা মালিকরা।

জানা যায়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, কামারখন্দ, এনায়েতপুর,  শাহাজাদপুর, উল্লপাড়া, কামারখন্দ, কাজীপুর ও সদর উপজেলার দুই লাখের পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম তাঁত রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এখানকার উৎপাদত শাড়ি-লুঙ্গি গামছা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়। সারা বছর কম উৎপাদন হলেও ঈদের প্রায় তিন-চার মাস আগে মালিক-শ্রমিক বেশী কাপড় উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু ঈদের আর প্রায় দেড় থেকে দুইমাস রয়েছে। এই সময়ে করোনার প্রভাবে তাঁত কারখানাগুলো বন্ধ থাকায় মালিক-শ্রমিক চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে তাঁত সমৃদ্র এলাকা। স্তব্ধতা বিরাজ করছে তাঁতপল্লীতে। আর যে সব তাঁত কারখানার মহাজনেরা বন্ধ করতে চাচ্ছেন না, সে সব কারখানার শ্রমিকেরাই আতঙ্কে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

বেলকচি উপজেলার তামাই গ্রামর তাঁত শ্রমিক আব্দুল মতিন জানান, করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাই নিজেকে বাঁচাতে কাজ বন্ধ রেখে দিয়ে বাড়িতে আছি। কাজ বন্ধ করায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আরেক শ্রমিকক আনিছুর রহমানান বলেন, তাঁতের কাজ করেই সংসার ও ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করাতাম। কিন্তু এই ভাইরাসের কারণে মালিক তাঁত বন্ধ করে দিয়েছে। সংসার ও ছেলে মেয়ে নিয়ে এখন বিপদে আছি। এ অবস্থায় সরকারের সহায়তা কামনা করছেন শ্রমিকরা।

সিরাজগঞ্জ হ্যান্ডলুম পাওয়ারলুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান বদি জানান, করোনার মহামারীতে তাঁতীরাও ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। জেলার তাঁতীরা তাঁত কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাঁতিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আর কদিন বাদেই ঈদ। এ মুহূর্তে কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা যেন বিপাকে রয়েছেন তেমনি মালিকরাও বিপাকে পড়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ জানান, যেহেতু জেলায় তাঁত শ্রমিকেরা সংখ্যায় বেশি। তাই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহীদের তাঁত শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারী অনুদানগুলো যাতে শ্রমিকদের ঘরে পৌছে সে ব্যাপারে তাদের বলা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর