বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

চরে বাধাগ্রস্ত নদীর প্রবাহ সেচ, নৌ-চলাচল ব্যাহত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

চরে বাধাগ্রস্ত নদীর প্রবাহ সেচ, নৌ-চলাচল ব্যাহত

হবিগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীতে একের পর এক জেগে উঠছে চর। এতে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে নদীতে পানি কমে যাওয়ায় সেচ কার্যক্রম এবং নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এসব নদীর মধ্যে রয়েছে খোয়াই, করাঙ্গী, ভেড়ামোহনা, শুটকী, রত্না, বিজনা, সুতাং, সোনাই, খাসটি, গোপলা, বিবিয়ানা, কালনী, বসিরা, ঘরদাইর, সাটিয়া, ছিলারআগ, ধলেশ্বরী ও কুশিয়ারা।

জানা যায়, উজানে ভারতের খোয়াই মহকুমার পদ্মবিল নামক স্থানে নির্মিত বাঁধের মাধ্যমে খোয়াই নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করায় এর পনিপ্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। একই কারণে আরও কয়েকটি নদীতে পানির প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। ফলে জেলার ভাটি অঞ্চলে নৌ-চলাচল ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বোরো আবাদে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলী বাজারের পূর্বদিকে কুশিয়ারা ও বিবিয়ানা নদীর সংযোগস্থলে চর পড়ায় বর্ষাকালেও এখানে নৌচলাচল ব্যাহত হয়। আজমিরীগঞ্জ থেকে শেরপুর হয়ে কুমরি কদমচাল পর্যন্ত বিস্তীর্ণ নদীপথের বিভিন্ন স্থানে চর জাগায় নৌযান স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছে না। ফলে আজমিরীগঞ্জ নৌবন্দরসহ স্থানীয় হাট-বাজারে মালামাল পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুর রহমান চৌধুরী জানান, হাওরবাসীকে রক্ষা করতে হলে কালনী-কুশিয়ারা নদীর ১৬১ কিলোমিটার ড্রেজিং করে নদীর উভয় তীরে বাঁধ নির্মাণ জরুরি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, কোনো কোনো নদীর উৎসস্থল ভারতে নদীর পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করায় নদীগুলোতে অব্যাহতভাবে চর পড়ছে। এসব নদী ড্রেজিং করা প্রয়োজন। আজমিরীগঞ্জ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, হাওর অঞ্চলের নৌ-বন্দর আজমিরীগঞ্জ এবং বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্যে সারা বছরই স্বাভাবিক নৌ-চলাচলের ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। নদীগুলোতে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ না থাকায় মালামাল পরিবহনে ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, হবিগঞ্জ জেলায় ৪৭১ কিলোমিটার নদী, খাল পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এসব নদী খনন করার জন্য প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত খোয়াই রিভার সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পে লাখাই উপজেলার ফরিদপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার ড্রেজিং করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে এ নদী ড্রেজিং করা হবে। তিনি জানান, ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলার বিভিন্ন         স্থানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত গোপলা, বিজনা, করাঙ্গী,          রত্না, ধলেশ্বরী, সোনাই ও খাসটি নদীর ১৭৬          কিলোমিটার অংশ ড্রেজিং প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। অচিরেই এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে।

সর্বশেষ খবর