বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

বনের কাঠ যেভাবে সারা দেশে পাচার হয়

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

থামছে না চট্টগ্রাম পার্বত্যাঞ্চলের কাঠ চুরি। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে বন বিভাগের তল্লাশির দুর্বলতায় পার পেয়ে যাচ্ছে কাঠ চোরাকারবারিরা। বেশি গাছ কাটা হচ্ছে রাঙামাটি উপজেলায়। চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে চারটি চেকপোস্ট থাকলেও ঝুঁকিভাতা না থাকা, জনবল ও অস্ত্র সংকটে সেগুলোর উল্লেখযোগ্য সফলতা নেই। চেকপোস্টগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট, ধুমঘাট, কুমিল্লার সুয়াগাজী ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ। সূত্রমতে, পার্বত্যাঞ্চলে বন বিভাগ ও যৌথ বাহিনী তল্লাশি করলেও গাছ কেটে দুর্গম ও জলপথে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। বিচ্ছিন্নভাবে নেওয়া গাছগুলো চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো করে কাভার্ড ভ্যানে নিয়ে আসা হয় কুমিল্লা ও ঢাকার পথে। বেশি আনা হয় সেগুন, গামার ও কড়ই কাঠ। চোরাকারবারিরা কাঠ ঢাকার পথে বহন করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে। তথ্য যেন ফাঁস না হয় সেজন্য কাঠ গাড়িতে তোলা শ্রমিকদের দুই দিন তাদের কাছে আটকে রাখে। এ ছাড়া গাড়িগুলো চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ে একটি নম্বর প্লেট দিয়ে। পথে এসে আরেকটি নম্বর লাগায়। চেকপোস্ট ফাঁকি দিতে তাদের অগ্রবর্তী রেকি টিম থাকে। বন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মহাসড়কে হাজারো গাড়ি। প্রতিটি গাড়ি চেক করা কঠিন। এতে যানজট লেগে যায়। রাতে-তো আরও সমস্যা। লাইট মেরে নম্বর প্লেট দেখতে হয়। সিভিল পোশাকে গাড়ি দাঁড়া করানো কঠিন কাজ। অনেক সময় তারা তল্লাশি দলকে চাপা দিয়ে চলে যায়। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তিনি বলেন, ওয়াকিটকি ও অস্ত্র থাকলে কাজের গতি বাড়বে। কুমিল্লার ফরেস্ট রেঞ্জার তোশাররফ হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র ছাড়া মহাসড়কে তল্লাশি করা ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সীমিত সামর্থ্য দিয়ে অবৈধ কাঠ জব্দ করছি। সম্প্রতি ২০টি অভিযানে দেড় কোটি টাকার কাঠ জব্দ করা হয়েছে।’ কুমিল্লা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নূরুল করিম জানান, ঝুঁকিভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে চেকপোস্ট আরও বেশি কাজ করতে পারবে। কাঠ চুরি কমে আসবে। নতুন অস্ত্র কেনার জন্য আবেদন জানানো হবে।

সর্বশেষ খবর