বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

পিয়াজ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ভালো নেই ফরিদপুরের পিয়াজ চাষিরা। চলতি বছর দাম ভালো পাওয়ায় এ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আবাদ করা হয়েছে পিয়াজের। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দিনমজুর সংকটের কারণে এখন পিয়াজ নিয়ে মহাঝামেলায় পড়েছেন তারা। বিভিন্ন এলাকায় খেত থেকে পিয়াজ তুলতে পারছেন না। অনেক খেতে পিয়াজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অন্যদিকে পরিবহন বন্ধ থাকায় খেত থেকে উঠানো পিয়াজ বাজারে নিতে না পেরে হতাশায় রয়েছেন চাষিরা।

ফরিদপুর জেলা বেশি পিয়াজ আবাদ হয় সদর, নগরকান্দা, সালথা, ভাঙ্গা ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায়। গত বছরের শেষ দিকে পিয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেলে কৃষক নতুন স্বপ্ন বুনতে থাকেন। পিয়াজ বিক্রি করে লাভবানও হন তারা। ফলে এ বছর শুরুতেই অধিক পরিমাণ জমিতে পিয়াজ আবাদ করেন চাষিরা। গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে পিয়াজ। এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু দাম ভালো থাকায় আরও ৫ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করে কৃষকরা। মার্চ মাসের প্রথম দিকে কিছু খেতের পিয়াজ উঠানো শুরু হয়। গত ১০-১২ দিন ধরে পিয়াজ উঠাতে পারছে না কৃষকরা। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেত থেকে পিয়াজ উঠানোর কাজ করলেও বেশির ভাগ খেতেই রয়ে গেছে পিয়াজ। দিনের পর দিন খেতে থাকায় তা নষ্ট হতে বসেছে। নগরকান্দার কাইচাইল গ্রামের আবু সাইদ জানান, তিনি এ বছর কয়েক বিঘা জমিতে পিয়াজ আবাদ করেছেন। কিন্তু দিনমজুরের অভাবে এখন পিয়াজ তুলতে পারছেন না। বেশি দাম দিয়েও দিনমজুর পাওয়া যাচ্ছে না।

মাঠে পিয়াজ পড়ে থাকলে তার বড় ধরনের লোকসান হবে। একই কথা জানান, কৃষক মোমরেজ, আলিম ও সফিউদ্দিন। তারা বলেন, লাভের আশায় বিভিন্ন এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে পিয়াজ আবাদ করেছি। খেতে পিয়াজ পড়ে থাকায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কৃষকরা জানান, গত বছর এই সময় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে দৈনিক হাজিরায় শ্রমিক পাওয়া গিয়েছিল। এবার পিয়াজ উঠানোর শুরুতে দিনমজুরের পারিশ্রমিক ঠিক থাকলেও সম্প্রতি ৭০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। করোনাভাইরাসের কারণে এলাকায় এখন দিনমজুর নেই বললেই চলে।

সর্বশেষ খবর