শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

পুলিশ আতঙ্কে ২০০ পরিবার দুর্বিষহ জীবন শত শিশুর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

একটি হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ আতঙ্কে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মধ্য পারপুগী শিববাড়ী গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের সদস্যরা গৃহছাড়া। তারা আজ এক জায়গায়-তো কাল আরেক জায়গায় অবস্থান করছেন। গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঝোপঝাড়ে। তাদের সঙ্গে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এ সব পরিবারের শতাধিক শিশু। ওই গ্রামের শিশুরা এতটাই আতঙ্কে রয়েছে যে গ্রামে কোনো গাড়ির শব্দ শুনলেই তারা লুকিয়ে পড়ছে যেখানে-সেখানে।

জানা যায়, গত ১০ মার্চ ওই এলাকার সামসুল নামে এক ব্যক্তি খুন হন। এ ঘটনায় থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং একাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন সামসুলের মা জুলেখা বেওয়া। গ্রামের মাহমুদা, লতিফা, হোসনেয়ারাসহ অনেকে জানান, সামসুল হত্যা মামলায় যে সাতজনের নাম উল্লেখ আছে তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাক। আমাদের তাতে কোনো আপত্তি নেই। অজ্ঞাতদের ধরতে গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার হয়রানির শিকার হচ্ছে পুলিশের কাছে। দিন নেই, রাত নেই এ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। হয়রানি ও গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রামের নারী-পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি হাসেন আলী নামে এক ভ্যানচালককে ধরে নিয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা পালিয়ে বেড়ানোয় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে মহিলা ও শিশুর। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে এলাবাসীর কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলেও জানান ভুক্তভোগীরা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গত মঙ্গলবার ওই এলাকায় খাবার বিতরণ করতে গেলে গাড়ির শব্দে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় সবাই। চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, আমরা যখন ওই গ্রামে খাবার দিতে যাই তখন তারা সবাই পালিয়ে যায়। শিশুদেরও দেখেছি ঝোপেঝাড়ে লুকাতে। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কোনো হয়রানি করছে না। আটকদের ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে যাদের নাম এসেছে শুধু তাদেরই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আতঙ্কিত হওয়ার বা হয়রানির কিছু নেই। জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, আমরা ওই এলাকায় জরুরি খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। কোনো নিরীহ মানুষ যেন এতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর