শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

করলার গ্রামে কৃষকের ‘তিতাহাসি’

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

করলার গ্রামে কৃষকের ‘তিতাহাসি’

নাটোরের সিংড়ায় স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে করলা নিয়ে কৃষক

নাটোরের সিংড়া উপজেলার খরসতি গ্রামকে বলা হয় করলার গ্রাম। গ্রামের শতকরা ৯৫ ভাগ কৃষক করলা চাষ করেন। প্রতিদিন খেত থেকে করলা তুলে নেওয়া হয় স্থানীয় খরসতি ঈদগাহ মাঠে। উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে এই মাঠে আসার ৩ কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে ভরা। এ কারণে এখানে আসতে চান না কোনো মহাজন। ফলে করোলার ন্যায্যদাম পান না কৃষক। বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রভাবে কমে গেছে করলার বিক্রি। চাষীদের দাবি, যোগাযোগ ব্যবস্থা যখন ভালো ছিল তখন এই হাট থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মণ করলা বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতেন তারা। তখন বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা করলা কিনে নিয়ে যেতেন। বরাবরের মতো এবারও গ্রামটিতে করলার বা¤পার ফলন হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় করলার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। সরেজমিন খরসতি গ্রামে গেলে চাষী সুমন, বাবু, শফিকুল, এ গ্রামের শতভাগ মানুষ সবজি চাষ করেন। এর মধ্যে শতকরা ৯৫ জন মানুষ আবাদ করেন করলা। পরিচর্যা ও কীটনাশকসহ এক বিঘা জমিতে করলা আবাদ করতে ১২-১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো মানের করলা হলে ৪৫-৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে অর্ধেক দামে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে করলা বিক্রি করতে হয়। অনেক সময় পাইকারি ব্যবসায়ী না আসায় খেতের করলা খেতেই নষ্ট হয়। উপজেলা কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে সিংড়ার ৭০ হেক্টর জমিতে করলার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু খরসতি গ্রামেই ২৫ হেক্টর। করলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪০ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। নওগাঁর পাইকারি ব্যবসায়ী মজিবর রহমান বলেন, রাস্তা খারাপ তাই করলা নিতে বেশি ভাড়া গুনতে হয়। মাত্র তিন কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ হলে আমাদের কষ্ট কমে যাবে। সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, খরসতি গ্রামে করলার চাষ প্রতি বছর বাড়ছে। কৃষকরা যাতে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পান সেজন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়া জরুরি।

সর্বশেষ খবর