রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

শরণখোলায় সুপেয় পানির সংকট

শুকিয়ে গেছে পুকুর পানি শোধনের বেশিরভাগ পিএসএফ অকেজো

বাগেরহাট প্রতিনিধি

শরণখোলায় সুপেয় পানির সংকট

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহের জন্য কলসি হাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ। এক কলসি পানির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। শুক্রবার তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এলাকার পুকুরগুলো শুকিয়ে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পুকুরে বসানো পানি শোধনের বেশিরভাগ পিএসএফ অকেজো। কিছু কিছু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পিএসএফ সচল থাকলেও করোনার ভয়ে অবাধে পানি নেওয়া সীমিত করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় নলকূপের পানি লবণাক্ত। এ অবস্থায় করোনার ভয় উপেক্ষা করে জীবন বাঁচাতে দূর-দূরান্তে মানুষ ছুটছে পানির জন্য। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যেসব পুকুরে পিএসএফ সচল রয়েছে, সেখানে দিনরাত লোকের দীর্ঘ লাইন। এক কলসি পানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। উপজেলা সদরের আর কে ডি এস বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ফিল্টারের পাশে সারি সারি কলস। নারী-পুরুষ অপেক্ষা করছেন এক কলস পানির জন্য। আর কে ডি এস বালিকা বিদ্যালয় থেকে এক কিলোমিটার দূরে উত্তর কদমতলা গ্রাম থেকে এখানে পানি নিতে এসেছেন গৃহবধূ মমতাজ বেগম (৪৫)। তিনি জানান, তাদের গ্রামে কোথাও খাবার পানি নেই। আগে গ্রামের পুকুরের পানি ফুটিয়ে এবং ফিটকিরি দিয়ে খেতেন। এখন সেসব পুকুর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় তারা দুর্ভোগে পড়েছেন। রমজান মাসে ঘরে খাবার পানি না থাকলে কষ্টের শেষ থাকে না। রায়েন্দা বাজারের ঝর্ণা রানী জানান, প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি পানির জন্য। করোনার কারণে ঘর থেকে বের হতে ভয় লাগে। তারপরও পানির জন্য না এসে উপায় নেই। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর শরণখোলায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দেয়। তখন সিডর বিধ্বস্ত এ উপজেলার সব ইউনিয়নের পানি সংকট নিরসনে প্রায় দুই হাজার পিএসএফ স্থাপন করে বিভিন্ন এনজিও। পরবর্তীকালে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং নির্মাণকাজ নিম্নমানের হওয়ায় কয়েক বছর যেতেই বেশিরভাগই নষ্ট হয় গেছে। শরণখোলা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, উপজেলার চারটি ইউনিয়নে বর্তমানে সরকারি এবং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে স্থাপিত ১১০০টি পিএসএফ রয়েছে। এর মধ্যে সচল আছে মাত্র ৪২০টি। বাকিগুলো পুকুরে পানি না থাকায় বন্ধ রয়েছে। সরকারিভাবে দুই হাজার পরিবারে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ট্যাংক দেওয়া হয়েছে। ১০টি সরকারি পুকুর পুনর্খনন করা হয়েছে। সেসব পুকুরে সোলার পিএসএফের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে তা ব্যবহারের উপযোগী হবে। সরকারি পুকুরে পিএসএফ চালু হলে পানির সমস্যা অনেকটা লাঘব হবে।

সর্বশেষ খবর