শুক্রবার, ১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

হাহাকার ৩১ হাজার খামারির

পানির দামে দুধ বিক্রি, উঠছে না গরুর খাবার খরচ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

হাহাকার ৩১ হাজার খামারির

বাগেরহাটের একটি খামারে গাভীর পরিচর্যায় ব্যস্ত শ্রমিক (বাঁয়ে)। বিক্রির জন্য দুধ নিয়ে অপেক্ষা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের দুগ্ধ শিল্পে। চাহিদা না থাকায় পানির দামে দুধ বিক্রি করছেন এ জেলার খামারিরা। ৫০-৬০ টাকা লিটারের দুধ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। কখনো এ মূল্য গিয়ে ঠেকছে ১৫ টাকায়। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে গরুর খাদ্যও কেনা যাচ্ছে না। ফলে জেলার কয়েক হাজার দুগ্ধ খামারি পরিবারে চলছে হাহাকার। তাদের দাবি, দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পথে বসবে। বাগেরহাট প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, এ জেলায় ডেইরি ফার্ম আছে ৩১ হাজার। এর মধ্যে একটি বা দুটি গাভী পালনের আয় দিয়ে বছরজুড়ে পরিবার চলে এমন খামারি আছেন কয়েক হাজার। বাগেরহাটের খামারের উৎপাদিত দুধ জেলার চাহিদা মিটিয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, খুলনা, গোপালগঞ্জে সরবরাহ হয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে ২৫০ টন দুধ উৎপাদন হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বর্তমানে এসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি বন্ধ সব দধি-মিষ্টির দোকান। এ কারণে দুধের চাহিদা কমে যাওয়ায় মিলছে না ন্যায্য দাম। বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খামারি নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ২০-২৫ টাকা কেজিতে দুধ বিক্রি করছি, যা দিয়ে গরুর খাবারও কিনতে পারছি না। দেশে এমন অবস্থা চলছে গরু বিক্রিও করা যাচ্ছে না। একই ইউনিয়নের অঘর ম-ল বলেন, বাইরের জেলা থেকে কেউ দুধ নিতে আসতে পারছে না। তার ওপর স্থানীয় মিষ্টি ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকায় ১৫ টাকা কেজি দরেও দুধ বিক্রি করছি। ফকিরহাট উপজেলার দুগ্ধ খামারি শেফালি দাস বলেন, প্রতিদিন যে দুধ হতো তা দিয়ে গরুর খাবার কেনার পাশাপাশি সংসারও ভালোভাবে চলে যেত। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির পর থেকে দুধ বিক্রি প্রায় বন্ধ। প্রায় দিনই দুধ প্রতিবেশী বা আত্মীয়-স্বজনদের দিচ্ছি। বাগেরহাট জেলা দুগ্ধ মালিক সমবায় সমিতি সহ-সভাপতি ফজলুল করিম বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বর্তমানে বাজারে দুধের ক্রেতা নেই বললেই চলে। এ ছাড়া দোকানপাট বন্ধ থাকায় গরুর খাবারও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় সরকারিভাবে জেলার দুগ্ধ খামারিদের সহযোগিতা না করা হলে এ শিল্প হুমকির মুখে পরবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান বলেন, বাগেরহাট দুগ্ধপ্রধান জেলা। এখানে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় আকারের কয়েক হাজার খামার রয়েছে। করোনার জন্য লকডাউনের কারণে বাগেরহাটের সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগ বন্ধ। এ কারণে দুধের দাম কমে গেছে।

আমরা স্থানীয়ভাবে জনসাধারণকে দুধ খেতে উৎসাহিত করছি, যাতে চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

সর্বশেষ খবর