শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

লিচুবাগানে করোনার থাবা

দুশ্চিন্তায় চাষি-আড়তদার, ৫০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

নাসিম উদ্দীন নাসিম

লিচুবাগানে করোনার থাবা

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার একটি লিচুবাগান -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনার প্রভাবে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়া আসতে না পারায় লিচু বিক্রি ও সরবরাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার লিচু চাষি ও আড়তদার মালিক সমিতি। উৎপাদিত লিচু বাজারে সরবরাহের সুযোগ সৃষ্টি না হলে ৫০ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হবে আশঙ্কা চাষিদের। লিচুর রাজ্যখ্যাত গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে একটি লিচুর আড়তে গত মঙ্গলবার এমন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কথা জানান চাষি ও আড়তদার মালিক সমিতি। গুরুদাসপুর উপজেলার লিচু আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার মধ্যে নাজিরপুর ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ বেশি। তাছাড়া সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলায়ও লিচু চাষ হয়। আড়ত থেকে ট্রাকে করে এখানকার লিচু যায় সারা দেশে। অনেকে বাগান থেকেও লিচু কিনে নেন। এ বছর করোনার কারণে অন্য জেলা থেকে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়ারা আসতে না পারায় বাগানের লিচু বিক্রি হয়নি। জমেনি আড়তও। এ কারণে লিচু বিপণন ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। আড়তদার সমিতির নেতা মাহবুবুর রহমান জানান, ভরা মৌসুমে নাটোরের আড়ত ও বাগান মিলে প্রতিদিন ১০০-১২০ ট্রাক লিচু যেত সারা দেশে। প্রতি ট্রাকে ৪-৫ লাখ টাকার লিচু থাকে। সে হিসাবে তিন সপ্তাহের মৌসুমে গড়ে ৮০ কোটি টাকার লিচু বিকিকিনি হতো। এ বছর ক্রেতার অভাবে লিচু ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে লিচুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় আট হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। লিচু চাষি রজব আলী, আবদুল মাজেদ, রেজাউল করিম জানান, লিচু ঘিরে এ এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা। এ কারণে ধারকর্জ করে বাগান পরিচর্যা করে থাকেন তারা। লিচুর মৌসুম শুরু হওয়ার তিন-চার মাস আগেই বাগান বিক্রি করে থাকেন। এবার করোনারভাইরাসের কারণে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়া আসতে না পারায় একটি লিচু বাগানও বিক্রি হয়নি। লিচু বাজারে সরবরাহের সুযোগ চেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তারা। গুরুদাসপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, এ উপজেলায় এবার ৪১০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। এখান থেকে তিন হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন লিচুর উৎপাদন হবে- যার বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার বেশি। তিনি বলেন, এ বছর অনুকূল আবহাওয়ায় লিচুর আকার বড় হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাপারী, পাইকার ও ফড়িয়া আসতে না পারা এবং বিপণনে সমস্যার কারণে লিচু চাষিদের কপাল পুড়তে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর