বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

হইহুল্লোড় না করতে বলায় বাড়িতে হামলা, চারজনকে পিটুনি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

ক্লাবে আড্ডার সময় হইহুল্লোড় করার প্রতিবাদ জানানোয় রুষ্ট একদল যুবক পাশের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং চারজনকে পিটুনি দেয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়ায় এ ঘটনা। বাড়ির পাশেই দেবীপ্রসাদ ক্লাব। জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেন শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাসিব কোরাইশী। ঘটনাস্থল লাগোয়া পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর এমন হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা করার জন্য এবং থানায় অভিযোগ না দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারকে চাপ দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতার বাবা আনিছ কোরাইশী। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা জানালেও তা অস্বীকার করছে পুলিশ। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আক্রান্ত বাড়িটির গৃহকর্ত্রী মুক্তি রানী চৌধুরী জানান, এক অতিথিকে তিনি আপ্যায়ন করছিলেন। এমন সময় দেখেন, মুখোশ পরা ১০-১২ জন বাঁশ ও স্টাম্প নিয়ে বাড়ির সামনে বকাবকি করছে। তাই তিনি বাইরে গিয়ে বলেন, তোমরা কারা? এভাবে বকাবকি করছ কেন? বলার সঙ্গে সঙ্গে তারা ঘরের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। মুক্তি রানী বলেন, ‘তারা আমার গেস্ট দেবোত্তম বিশ্বাসকে বেদম পিটুনি দেয়। আমি ওদের বারণ করলে আমাকেও কিল-ঘুসি মারে। এক পর্যায়ে আমার যুবতী মেয়ে আশা রানীকে লাঞ্ছিত করে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে এলে তারা ক্ষান্ত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান আকাশকে নিয়ে আমি ভয়ে আছি আবার কখন হামলার শিকার হতে হয়। ঘটনার সময় আমার ছেলে ঘরে ছিল না। থাকলে হয়তো ওকে শেষ করে দিত। রাতেই আমরা এমপি সাহেবকে ব্যাপারটি জানিয়েছি। তিনি থানায় অভিযোগ করতে বললে আমরা তার নির্দেশনা অনুযায়ী কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করে এসেছি।’

মুক্তি রানীর ছেলে আকাশ চৌধুরী বলেন, ‘হাসিব কোরাইশী ছাত্রলীগের পদ পেয়ে বেপরোয়া হয়ে গেছে। আমিও ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলাম না। এখন থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য আমার মাকে বারবার ফোন দিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। শুনলাম দুজন ধরা পড়েছিল। কিন্তু যারা আমার মাকে মারল তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।’

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনা সঠিক হলে হাসিব কোরাইশিকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ওই পরিবারের কেউ আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর