সোমবার, ১৮ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

অ্যামব্রয়ডারি পল্লীতে বিষাদের ছায়া

ক্রেতা নেই, পুঁজি হারানোর শঙ্কায় কারিগররা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

অ্যামব্রয়ডারি পল্লীতে বিষাদের ছায়া

কাপড়ে কারুকাজ করায় ব্যস্ত অ্যামব্রয়ডারি পল্লীর কয়েকজন নারী

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নান্দনিক কারুকাজ আর বাহারি শাড়ি, সালোয়ার-কামিজসহ হাতে তৈরি পোশাক নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের অ্যামব্রয়ডারি পল্লীর দুই শতাধিক নারী কারিগর। ঈদ উৎসবে ভালো বিকিকিনির আশায় পোশাক তৈরিতে তারা বড় বিনিয়োগ করেছিলেন। ঈদের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও পাইকারি ক্রেতা-ব্যবসায়ীর খুব একটা দেখা মিলছে না। ফলে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন কারিগররা। সাদুল্যাপুর উপজেলা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জামুডাঙ্গা গ্রামে গড়ে উঠেছে অ্যামব্রয়ডারি পল্লী। গ্রামের দুই শতাধিক নারী কখনো বাড়িতে, কখনো উঠানে বসে বিভিন্ন পোশাকে সুই আর রঙিন সুতায় বাহারি নকশার কাজ করেন। তারা জানান, এক সময়ে তাদের সংসারে অভাব ছিল। প্রশিক্ষণ নিয়ে কাপড়ের কাজ করে বাড়তি উপার্জন করে সে অভাব দূর হয়েছে। শাড়ি ও জামায় কাজ করে মজুরি হিসাবে মাসে ৩-৪ হাজার টাকা আয় হতো। এবার করোনার প্রভাবে কাজ যেমন কম, তেমনি বেচাকেনাও নেই। নারী উদ্যোক্তা লাভলী বেগম বলেন, ‘করোনার প্রভাবে বৈশাখেও পোশাক বিক্রি হয়নি। এখন ঈদের মার্কেটও জমেনি। লাভের আশায় ব্যাংক ঋণ এবং নিজের জমানো সব টাকা বিনিয়োগ করে পোশাক তৈরি করেছেন। এখন ক্রেতা না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুঁজি হারিয়ে নারী উদ্যোক্তাদের পথে বসতে হবে। সংকট মোকাবিলা সরকারের সহায়তারও দাবি জানান তিনি’। সাদুল্যাপুর পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান জাহিদ বলেন, ‘গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে অ্যামব্রয়ডারি পল্লী গড়ে তোলা হয়। সুই-সুতার বাহারি নকশার পোশাক তৈরির উপার্জিত অর্থে ভালোই চলছিল নারী কারিগরদের সংসার। এবার করোনার প্রভাবে অ্যামব্রয়ডারি পল্লীর ২৫-৩০ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।’ আঁধার দেখছেন দর্জি কারিগররা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রতিবছর ঈদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দর্জিপাড়ার কারিগরদের দম ফেলার ফুরসত থাকত না। ব্যস্ত সময় পার করতেন তারা। পছন্দের পোশাক বানাতে দর্জির দোকানগুলোতে জমত ভিড়। এবার করোনার প্রভাবে জেলার প্রায় ২৫০ দর্জি দোকানের তিন হাজার কারিগর বেকার হয়ে পড়েছেন। করোনার কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে তাদের মেশিনের চাকা বন্ধ। ঈদ সামনে রেখে শৌখিন গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন  কারিগররা। দর্জিপট্টির কারিগর রমজান আলী বলেন, প্রতিবছর শবেবরাতের পর থেকে রমজানের মাঝামাঝি পর্যন্ত কাজের ধুম থাকত। এবার মজুরি পাওয়া-তো দূরের কথা, দোকানই বন্ধ। পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে ঈদ করব সেটা ভেবেই চোখে অন্ধকার দেখছি।

সর্বশেষ খবর