মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

পাহাড়ে পানির সংকট

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে পানির সংকট

পাহাড়ে তীব্র হয়ে উঠেছে পানি সংকট। প্রতি বছর গ্রীষ্মে এ সমস্যা ভয়াবহ রূপ নেয় পাহাড়ে। এরই মধ্যে খরায় তাপে শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া, ঝর্ণা, খাল-বিল ও কূপ। একই প্রভাব পড়েছে কাপ্তাই হ্রদে। কমেছে হ্রদের পানি। মৃত প্রায় পাহাড়ি ছড়া ও ঝরনা। নানা সংকটের মধ্যে একমাত্র ভরসা ছিল কাপ্তাই হ্রদ। তাও পরিণত হয়েছে ছড়ায়। হ্রদের বুকে জেগে উঠেছে হাজারো ডুবোচর। পাহাড় থেকে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বহুগুণ সংকট বাড়িয়েছে পাহাড় বাসিন্দাদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের বেশির ভাগ মানুষ নির্ভরশীল ভূ-পৃষ্ঠের পানির ওপর। পাহাড়ের পাদ দেশে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষই পায়নি নলকূপ সুবিধা। তাই তাদের বাধ্য হয়ে নির্ভর থাকতে হয় পাহাড়ি ছড়া, ঝরনা, খাল, বিল ও কূপের ওপর। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ি নারীদের সংগ্রহ করতে হয় এ খাবার পানি। কিন্তু সম্প্রতি তীব্র খরায় শুকিয়ে গেছে পাহাড়ের বেশিরভাগ ছড়া ও ঝরনা। তাতেই বেড়েছে পানি সংকট। মূলত বছরের শেষ এবং শুরুতে পানি সংকটে দেখা দেয় পাহাড়ে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পান করছেন কাপ্তাই হ্রদের অনিরাপদ পানি। এতে দেখা দিয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নানা রোগবালাই। আর এখন এমন পরিস্থিতি রাঙামাটির পুরো পাহাড়জুড়ে। রাঙামাটির ১০টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলা নৌপথে। আর বেশ দুর্গম। সেগুলো বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি। এসব অঞ্চলের মানুষের জীবনযাপন পাহাড়ের সঙ্গে। লাগেনি তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া। উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নে নেই নলকূপ ব্যবস্থাও। তাই এসব পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে বাধ্য হয়ে নির্ভর থাকতে হয় ছড়া ও ঝরনা কিংবা কূপের পানির পর। কিন্তু গ্রীষ্মকালে সে পানিতে দেখা দেয় নানা সংকট বলে জানান জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা। তিনি বলেন, জুরাছড়ি উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার ইউনিয়নগুলো বেশ দুর্গম। প্রতি বছর ঠিক এ সময়টা খাবার পানির সংকট দেখা দেয় সেখানে। যার কারণে অনেক শিশু পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারাও যায়। জুরাছড়ির ইউনিয়নগুলোয় এখানো নলকূপ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। তাছাড়া দুর্গমতার কারণে কেউ নলকূপের কাজ করতে চায় না। তাই রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে এলাকায় এলাকায় নলকূপ বসানো হলে খাবার পানির সংকট দূর হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর