শনিবার, ৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

দিনে দুবার প্লাবিত হচ্ছে ৫০ গ্রাম

আম্ফানে ভেঙে যাওয়া বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে পানি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

দিনে দুবার প্লাবিত হচ্ছে ৫০ গ্রাম

সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা (বাঁয়ে), বাগেরহাটে ভাঙা বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকছে পানি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে সাতক্ষীরায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ গত ১৬ দিনেও মেরামত করা হয়নি। ফলে উপকূলজুড়ে চারদিকে এখন থৈ থৈ পানি। বাঁধের ভেঙে যাওয়া ২৭টি স্পটের মধ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে ৬-৭টি স্থানে রিংবাঁধ দেওয়া হলেও তা প্রবল জোয়ারে আবারও ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ফলে দিনে দুই বার সুন্দরবন সংলগ্ন কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, গলঘেষিয়া নদীর জোয়ারে শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, কাশিমারি এবং আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বাড়ি-ঘরে পানি থাকায় এখনো উপকূলের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সাইক্লোন সেল্টার, স্কুল-কলেজ, বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১ ও ২ এর অধিনে সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মোট ৬৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ৫৯ কিলোমিটার ল-ভ- করে দিয়েছে। পাউবোর তথ্যমতে এতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শ্যামনগরের লেবুবুনিয়া ও কাশিমারি ইউনিয়নের ঘোলা এলাকার বাঁধ সংস্কারে কাজ করছে সেনাবাহিনী। লেবুবুনিয়ার ভেঙে যাওয়া ৬০ মিটারে রিংবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি আটকানো সম্ভব হলেও ঘোলার ৮০ মিটারের রিংবাঁধ আবারও ধসে গেছে। ভাঙা এলাকা দিয়ে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় উপকূলের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এখন হাঁটু কোথাও কোমর পানি। আশাশুনির শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, ৪ নম্বর পোল্ডারের হাজরাখালি বাঁধ মেরামত করতে সেনাবাহিনী এলেও ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে বৃহস্পতিবার সেনা সদস্যরা ফিরে গেছেন। তিনি আরও জানান, প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করে তার ইউনিয়নের ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে আছে। দুশ্চিন্তায় আছে উপকূলের মানুষ। সাতক্ষীরা পাউবোর্ড-১ ও ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান এবং আবুল খায়ের জানান, বাঁধ মেরামতে অচিরেই ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।

বাগেরহাটে ভুক্তভোগী ৩০০ পরিবার : বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, শরণখোলায় পাউবোর ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে এখনও দিনে দুই বার ডুবছে বগী-গাবতলার তিন শতাধিক পরিবার। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ভাঙা বাঁধ দিয়ে পূর্ণিমার প্রভাবে দুই দিন ধরে বলেশ্বর নদীর জোয়ারের পানি হু হু করে ঢুকছে গ্রাম। বসতঘরে হাঁটু পানি। রান্না-বান্না বন্ধ। দুর্ভোগের আর শেষ নেই পরিবারগুলোর। স্থানীয় বগী ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও দক্ষিণ সাউথখালীর ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, তাদের দুই ওয়ার্ডের নদীসংলগ্ন তিন শতাধিক পরিবার ভোগান্তিতে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। বাড়িঘরে পানি ঢুকে এলাকাটি মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বলেশ্বর পারের সহস্রাধিক মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। শরণখোলার ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, বগী-গাবতলার দুই কিলোমিটার এলাকায় রিংবেড়িবাঁধ দেওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা জরিপ করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হতে পারে।

 

সর্বশেষ খবর