সোমবার, ৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিলীন হচ্ছে বসতভিটা নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই বিভিন্ন জেলায় নদীভাঙন

প্রতিদিন ডেস্ক

বিলীন হচ্ছে বসতভিটা নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি (বাঁয়ে), কুমিল্লায় গোমতী নদীর ভাঙনের কবলে বসতভিটা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বর্ষ মৌসুম শুরুর আরও প্রায় এক সপ্তাহ বাকি। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নদ-নদীতে শুরু হয়েছে ভাঙন। কুমিল্লায় গোমতী, লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলা নদী এবং কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ তিন জেলায় নদীতে বিলীন হয়েছে বহু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। প্রতিনিধিদের খবর- কুমিল্লা : তিতাস উপজেলায় গোমতী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে বসতবাড়ি। বিপর্যস্ত হয়েছে যোগাযোগ ব্যাবস্থা। হুমকির মুখে রয়েছে স্কুল-মসজিদ। উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নে গোমতীর পাড় ঘেঁষে অবস্থিত নারান্দিয়া (পশ্চিমপাড়) গ্রাম। নারান্দিয়া সংলগ্ন গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের ৮-১০টি স্থানে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে ৭০-৮০ বাড়ি। গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাউছিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা এবং কয়েক শ বছরের পুরনো জামে মসজিদটিও হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুম মোল্লা বলেন, অনেক তদারকির পরও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। এটি এখন ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে দাউদকান্দি উপজেলায়ও গোমতীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার খোশকান্দি, চরমাহমুর্দ্দী, পাচানী, লক্ষ্মীপুর এলাকার ঘরবাড়ি ফসলিজমি বিলীন হচ্ছে। অনেকে ভয়ে ঘরবাড়ি সরাতে শুরু করেছেন। এলাকাবাসী জানান, চলতি বছর এরই মধ্যে ৫০-৬০ বাড়ি নদীতে চলে গেছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।

কুড়িগ্রাম : ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে উলিপুর উপজেলার নদী পাড়ের চার গ্রামের মানুষ। জানা যায়, গত কয়েক দিনে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি, স্থাপনা, কৃষিজমিসহ সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ জনপদের বহু লোক। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার জানিয়েও ফল পাননি বলে অভিযোগ কবলিতদের। সম্প্রতি মানববন্ধনও করেছেন তারা। উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে ভাঙনের কবলে পড়েছে পালের ঘাট, নয়াদারা, নীলকণ্ঠ ও হাতিয়া গ্রাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে গ্রামগুলোর দুই শতাধিক ঘর-বাড়িসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, দ্রুত স্থায়ী কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে উলিপুর ও চিলমারী দুই উপজেলার ভাঙনরোধে চলমান প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার কাজও হুমকিতে পড়বে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের ডানতীরে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার স্থায়ী নদী সংরক্ষণ কাজ শুরু হয়েছে।

লালমনিরহাট : তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন। গত এক সপ্তাহে সদর, আদিতমারি ও পাটগ্রাম উপজেলার ছয় ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গাছপালা বিলীন হয়েছে।  হুমকির মধ্যে রয়েছে আরও শতাধিক পরিবারের বাড়ি। সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ২২টি পয়েন্টে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।  কিছু এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। লালমনিরহাট পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, ভাঙন ঠেকাতে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আটটি প্যাকেজে ৮ কোটি টাকার কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর