রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

কল মালিকদের অসহযোগিতায় ভাটা পড়েছে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান

উদ্বোধনের পর মাস হতে চললেও লক্ষ্যমাত্রার ১০ ভাগ চালও সংগ্রহ হয়নি

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

চালকল মালিকদের অসহযোগিতায় কুষ্টিয়ায় সরকারের ধান চাল সংগ্রহ অভিযান ভেস্তে যেতে বসেছে। উদ্বোধনের পর মাস হতে চললেও লক্ষ্যমাত্রার ১০ ভাগ চালও সংগ্রহ হয়নি। একই অবস্থা ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রেও। লটারি হলেও শুরু করা যায়নি ধান সংগ্রহ কার্যক্রম। তবে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সংগ্রহ অভিযান সফলভাবে শেষ করার আশা করছেন। আপদকালীন মজুদের জন্য সরকার প্রতি বছর আমন ও বোরো মৌসুমে স্থানীয় চালকল মালিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে চাল সংগ্রহ করে। করোনার কারণে চলতি বোরো মৌসুমে সরকার এ সংগ্রহ অভিযানকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে এবার ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে। তবে কুষ্টিয়ার চালকল মালিকদের গড়িমসিতে এবারের সংগ্রহ অভিযান গতি পাচ্ছে না। জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়া জেলা থেকে এবার ৩৪ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন হয়েছে গত ১৭ মে। এক মাস পার হতে চললেও  মাত্র দুই হাজার মেট্রিক টন চাল কেনা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে, কয়েকটি উপজেলায় লটারি হলেও ধান সংগ্রহ শুরু হয়নি। জেলা থেকে এবার ৬ হাজার মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চালকল মালিকদের  দাবি, বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি মোটা ধানের সংকটও আছে। সদর উপজেলার খাজানগর মোকামের চালকল মালিক জয়নাল আবেদিন প্রধান জানান, দেশের যেসব অঞ্চল থেকে তারা ধান সংগ্রহ করেন সেসব এলাকায় ধানের দাম বেশ চড়া। ওই দামে ধান কিনে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করলে তাদের লোকসান হবে। বাংলাদেশ অটো মেজর রাইস অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলছেন, খোলা বাজারেই মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। সেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩৬ টাকা। তিনি বলেন, বিষয়টি সরকারের ওপর মহলে জানানো হয়েছে। আশা করি সরকার চালকল মালিকদের স্বার্থের বিষয়টি থাকবে। তবে চুক্তি অনুযায়ী মিল মালিকদের থেকে শতভাগ চাল সংগ্রহের বিষয়ে এখনো আশাবাদী জেলা খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে কিছুটা জটিলতা থাকলেও  সেটি কাটিয়ে উঠে অভিযান সফল করা সম্ভব হবে। আর খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন করোনা পরিস্থিতে অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ ঠিক রাখতে গ্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এখনই কার্যকর ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ধান ও চাল সংগ্রহ ভেস্তে যেতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহলের।

সর্বশেষ খবর