রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদ্যুতের খুঁটি-ট্রান্সফরমার বাণিজ্য

দালালদের মাধ্যমে নেওয়া হয় টাকা, যত্রতত্র বসানো হচ্ছে খুঁটি-ট্রান্সফরমার

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বিদ্যুতের খুঁটি-ট্রান্সফরমার বাণিজ্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পিডিবির স্থাপন করা ট্রান্সফরমার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) নতুন ট্রান্সফরমার, খুঁটি বসানোর কাজে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। দালালদের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে এই কাজের বিপরীতে। প্রকল্প কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে এ অর্থ। টাকার বিনিময়ে যত্রতত্র বিদ্যুতের খুঁটি- ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে আছে এমন অভিযোগও।

জানা যায়, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প কুমিল্লা জোন-১ এর অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুরনো বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। জেলা সদরে বিক্রয় ও বিতরণ ব্যবস্থার দুটি বিভাগ ১ ও ২ এবং সরাইল ও আশুগঞ্জ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ এই প্রকল্পের আওতাধীন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের কাজের জন্য ৮৫টি ট্রান্সফরমার এবং ছয় হাজার খুঁটি এসেছে। এরমধ্যে ৫০টি মতো ট্রান্সফরমার এবং দুই হাজার খুঁটি বসানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে সাব-স্টেশন বসানোসহ কুমিল্লা জোনে দুই হাজার কোটি টাকার কাজ হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরুর পর থেকেই ট্রান্সফরমার ও খুঁটি বিক্রির অভিযোগ উঠে। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিরামপুর নতুন বাজার এলাকায় দুটি ট্রান্সফরমার এবং ২৫-৩০টি খুঁটি বসানোর জন্য তিন লাখ টাকার চুক্তি হয়। গ্রাম থেকে টাকাও উঠানো হয়েছে। শহরের ভাদুঘর কাঞ্চনপুর, শহরতলির বিরাসার জোড়া কবরস্থানের কাছে ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে টাকার বিনিময়ে। একইভাবে সরাইল এবং আশুগঞ্জেও টাকা নিয়ে ট্রান্সফরমার-খুঁটি বসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। স্থানীয় দালালচক্রের মাধ্যমে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ পিডিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হান্নান বলেন, ‘এই কাজের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কাজ শেষ হলে আমরা তা বুঝে নেব।’ এদিকে প্রকল্পের কয়েক লাখ টাকার মালামাল রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটে সম্প্রতি। এ বিষয়ে সদর মডেল থানায় গত ১৫ মে এজাহার দেওয়া হয়। বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর আনসার ক্যাম্প ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান জানান, যেখান দিয়ে চুরি হওয়ার কথা ওইদিকে কলাপসিবল গেট ও সাটার ঠিক রয়েছে। তারা (পিডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারী) চুরির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। কয়দিন পর বলেন, অন্য গুদামে তারা মালামাল রেখেছেন। ভুলে তারা চুরির কথা বলেছেন বলে জানান। ভান্ডাররক্ষক জাবেদ রহিম বলেন, দরজা ফাঁকা দেখে আমি মনে করেছিলাম চুরি হয়েছে। পরে অন্য গুদামে মালামাল পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। থানা পুলিশও তদন্ত করছে।

সর্বশেষ খবর