শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

যমুনার ভাঙনে বদলে যাচ্ছে দুই উপজেলার মানচিত্র

শুভ্র মেহেদী, জামালপুর

যমুনার ভাঙনে বদলে যাচ্ছে দুই উপজেলার মানচিত্র

যমুনার ভাঙনের কবলে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মুন্নিয়ারচর আশ্রয় কেন্দ্র -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জামালপুরে যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বদলে যাচ্ছে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র। বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই যমুনার ভাঙন তীব্র হয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ভাঙনে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের শত শত বসতবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র, স্কুল-মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে। সব হারিয়ে অনেকের আশ্রয় হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে জেলার নবনির্মিত একমাত্র নৌ থানাটিও। ষাটোর্ধ্ব জোতদ্দার মাইনুদ্দিন জানান, জীবনে কতবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি তা স্পষ্ট মনে নেই। সব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মাইনুদ্দিনের আশ্রয় হয়েছিলো যুমনার দ্বীপচর মুন্নিয়া আশ্রয়কেন্দ্রে। প্রায় তিন বছর ধরে কোনো রকমে দিনযাপন করলেও এবারের ভাঙনে হারিয়েছেন সেই আশ্রয়টুকুও। দুই সপ্তাহ ধরে তাদের রাত কাটছে খোলা আকাশের নিচে। শুধু মাইনুদ্দিনই নয় ইসলামপুরের মুন্নিয়ারচর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ১৫টি ব্যারাকে থাকা ৭৫টি পরিবারের অসহায়ত্বের গল্পটা প্রায় একই। যমুনার ভাঙনে বেলগাছা ইউনিয়নের মুন্নিয়ারচর আশ্রয়ণ কেন্দ্রই নয়, ঝুঁকিতে পড়েছে মুন্নিয়ারচর গুচ্ছগ্রামটিও। এছাড়া ভাঙনে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাজলা, কাঠমা এবং মাইজবাড়ী গ্রামের শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। রাতে বেড়ে যায় ভাঙন। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদী-তীরবর্তী মানুষ। অপরদিকে দেওয়ানগঞ্জের খোলাবাড়ির দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে তীব্র ভাঙন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ভাঙনে হারিয়ে গেছে এ উপজেলার সহ¯্রাধিক বসতবাড়ি। বিলীন হয়েছে খোলাবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসা, গাছাপালা, ফসলি জমি, কবরস্থানসহ খোলাবাড়ি বাজারের প্রায় পুরো অংশ। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী  আবু সাঈদ জানান, পাউবো নদীর পাড় রক্ষায় কাজ করে থাকে, নদীর ভেতরে চরের ভাঙন রোধ করা তাদের দায়িত্ব নয়। তবে তিনি জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার খোলাবাড়ির গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় ৩০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। ভাঙন রোধে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর