রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সেবার নামে বেশি টাকা ঠকছে খামারি-কৃষক

সরাইল প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

সেবার নামে বেশি টাকা ঠকছে খামারি-কৃষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে সেবার নামে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ঠকানো হচ্ছে খামারি ও কৃষকদের। ছাগল প্রকল্পের টাকা লুটপাটের বিষয়টিও ওপেন সিক্রেট। স্থাপনা নির্মাণ ও প্রশিক্ষণের নামে ভুয়া ভাউচার বানানোর অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আর প্রশিক্ষণ কক্ষটি ব্যবহার হচ্ছে বসবাসের জন্য। জানা যায়, ২০১৯ সালে ৯ অক্টোবর জাহাঙ্গীর আলম সরাইল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। এর পরই ভূরিভোজের আয়োজনে করেন তিনি। অফিসে বসেই টাকার বিনিময়ে অন্য উপজেলার পশুর চিকিৎসা দেন। দালালের সহায়তায় ইচ্ছামত টাকা নিয়ে দিচ্ছেন সরকারি ভ্যাকসিন। অভিযোগ আছে হাসপাতালের চেয়ে বাড়িতে গিয়ে পশুর চিকিৎসায় বেশি আগ্রহী তিনি। ২০২০ সালে গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ে খামারিদের প্রশিক্ষণ বাবদ সরকারি বরাদ্দ আসে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা। একই বছর পিপিআর ও খোড়া রোগ বিষয়ে ৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ বাবদ ৩৭ হাজার ৭০০, ছাগল পালন প্রশিক্ষণ ও খাবার বাবদ ৫৮ হাজার ৮০০, ছাগলের মেলার আয়োজন বাবদ ৫০ হাজার ৬০০, মহিষ পালন প্রশিক্ষণ বাবদ এক লাখ ২৭ হাজার ও অফিসের পাশে স্থাপনা নির্মাণ বাবদ এসেছে এক লাখ টাকা। বরাদ্দের ৫ লাখ ৬ হাজার টাকার কোনো কাজই হয়নি। অথচ গত ১০ জুন আগেভাগেই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাল স্বাক্ষরে ভূয়া বিল ভাউচার হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ২০১৯ সালের জুন মাসে ছাগল প্রকল্পে ৫৫ হাজার টাকা আসে। ওই টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। গত ১ মার্চ ক্ষমতাপুর গ্রামের খামারিদের কাছে ২৫ পয়সার ভ্যাকসিন ৩০ টাকা করে বিক্রি করা হয় ১৬৬ জনের কাছে। পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাবদ নেওয়া হচ্ছে টাকা। সরাইল বাজারের এক কসাই জানান, পশু পরীক্ষার জন্য ৫০/১০০/২০০ টাকা দিতে হয়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের নির্দেশ বা পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা অসম্ভব। হাসপাতালে পশু চিকিৎসায় কোনো ভিজিট নেওয়া হয় না। খুশি হয়ে দিলে ভিন্ন কথা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘অফিস চলাকালে হাসপাতালে বসে ভিজিট নিয়ে পশুর চিকিৎসা দেওয়া আর ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ার কোনো বিধান নেই। তাছাড়া প্রশিক্ষণ কক্ষে কর্মকর্তা বসবাস করতে পারেন না।’ ছাগল প্রকল্পের পিডি শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।’

সর্বশেষ খবর