শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

রক্ষা পাবে ফসল, ভোগান্তি কমবে চলাচলে

ধলাই নদের তীরে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

রক্ষা পাবে ফসল, ভোগান্তি কমবে চলাচলে

ধলাই নদের তীরে নবনির্মিত বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের প্রতাপী এলাকায় ভাঙনকবলিত দুই কিলোমিটার বিকল্প বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ পুনর্নির্মাণ হয়েছে। বাঁধটি নির্মিত হওয়ায় বছরে রক্ষা পাবে ১০ কোটি টাকার ফসল। তবে বাঁধের জন্য জমি ও বাড়িঘর ছেড়ে দেওয়া পরিবারগুলো পড়েছে বিপাকে। সরকারের কাছে পুনর্বাসনের দাবি করছেন এ সব মানুষ। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো জানায়, রহিমপুর ইউনিয়নের চৈত্রঘাট বাজার সংলগ্ন সেতু থেকে প্রতাপী গ্রামে ধলাই নদের ডান তীরের দুই কিলোমিটার বাঁধ প্রায় এক যুগ আগে ভেঙে যায়। এরপর থেকে প্রতিবছর নদের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেই ভাঙনস্থান দিয়ে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতো। রাস্তাঘাট বাড়িঘর তলিয়ে যেতো। নষ্ট হতো প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল। অস্থায়ী ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছিলো না। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৮৯ দশমিক ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। বাঁধটি নির্মাণের ফলে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ও পতনঊষার ইউনিয়ন এবং বাজনগরের কামারচাক ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমবে। রক্ষা পাবে স্থানীয় কৃষকদের কষ্টের ফসল। স্থানীয়রা জানান, পুরনো বাঁধটি ক্রমান্বয়ে ভাঙতে ভাঙতে জায়গাটি প্রায় উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল। প্রতিবছর বন্যা হতো এবং ফসল নষ্ট হতো। বাঁধ পুনর্নির্মাণ হওয়ায় এখন তারা অনেকটা নিশ্চিন্ত। প্রতাপী গ্রামের পারভেজ ও আশিক মিয়া বলেন, ‘বর্ষা আমাদের কাছে ছিল আতঙ্কের নাম। নদের পানি বাড়লেই বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটতো। বাঁধটি নির্মাণ হওয়ায় আমাদের যাতায়াতের সুবিধাও হয়েছে।’ সবাই খুশি হলেও ভিটেমাটি হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের রুবি, কুদরত মিয়া, বাবুল মিয়া, ফাবিদ মিয়া, কানন বিবিসহ অন্তত ২০ পরিবার। জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই বিনামূল্যে তাদের ভিটেবাড়ি ছেড়ে দিতে হয়েছে বাঁধ নির্মাণের জন্য। তারা জানান, নদীতীরে ছিল তাদের বাড়িঘর। বাঁধ নির্মাণের জন্য শেষ আশ্রয়টিও ছেড়ে দিতে হয়েছে তাদের। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। তারা অভিযোগ করেন, অন্যত্র পুনর্বাসনের আশ^াসে তাদের বাড়ি ছাড়া করা হয়েছিলো কিন্তু এখন পুনর্বাসন করা হচ্ছে না। বাঁধ নির্মাণের কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুনা ট্রেডার্স। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, কাজের শিডিউলে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি ছিলো না। তারা শিডিউল অনুযায়ী কাজ করেছে।

রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ বদরুল জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ জন্য সরকারি জমি খোঁজা হচ্ছে। পাউবোর মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের জন্য জমি অধিগ্রহণের বিধান নেই। থাকলে অবশ্যই হতো।

সর্বশেষ খবর