সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বাবার সঙ্গে হোটেলে কাজ করছে স্কুলছাত্র

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

ভালোই চলছিল তার জীবন। সারা দিন স্কুল আর খেলাধুলা। দুরন্ত আনন্দে কাটছিল রঙিন শৈশব। বাবার আয়ে সংসার চলে তাদের। কিন্তু হঠাৎ কভিড-১৯ এসে সবকিছু ওলট-পালট করে দিল। বাবার আয় ইনকাম কমে গেল। স্কুল বন্ধ হয়ে গেল। খেলাধুলাও বিদায় নিয়েছে আপাতত। তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার বৈরাগীগজ গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মুসলিম উদ্দিন (১২) এখন বাবার সঙ্গে কাজ করছে ভাতের হোটেলে। সলিম উদ্দিনের ছেলে মুসলিম উদ্দিনের বড় দুই বোন  সুমি আক্তার (১৬) ও শিউলি আক্তার (১৫) নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়ছে। দুই বোনের সঙ্গে গিতালগছ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গত জানুয়ারি মাসে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে সংসারের অভাব মেটাতে এখন তাকে কাজ করতে হচ্ছে ভজনপুর বাজারের একটি হোটেলে। সারা দিন হোটেলে খেতে আসা মানুষকে পানির গ্লাস দেওয়ার কাজ করে সে। একই হোটেলে বাবা চা বানায়।  মুসলিম উদ্দিন জানায়, বাবার ইচ্ছা আমি পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হব। কিন্তু অভাবের কারণে বাবার সেই স্বপ্ন কি পূরণ হবে? পড়াশোনা করে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা আমার। কিন্তু বাবা যেদিন হোটেলে কাজ করবে না সেদিন আমাদের বাসায় কোনো খাবার তৈরি হয় না। মুসলিম উদ্দিনের বাবা সলিম উদ্দিন (৪২) জানান, অভাবের সংসার। আমার শতবর্ষী মা সলিমা খাতুন ওরফে কালো বেওয়া এখন বয়সের ভারে শয্যাশায়ী। প্রতিনিয়তই তাকে ওষুধ খাওয়াতে হয়। কোনোরকমে আড়াই শতক জমিতে ভিটাবাড়ি করে বসবাস করছি। কাজকাম কমে গেছে। একদিকে মায়ের ওষুধের খরচ জোগানো অন্যদিকে তিন ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ জোগান দেওয়া এখন রীতিমতো আমি দিশাহারা।

তিনি সমাজের উচ্চবিত্ত এবং সরকারি সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর