সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

ভাঙনে নিঃস্ব তিস্তাপাড়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ভাঙনে নিঃস্ব তিস্তাপাড়ের মানুষ

বাঁশ ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা স্থানীয়দের

লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, আদিতমারী ও সদর উপজেলায় তিস্তা নদীর ভাঙন আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। বাপ-দাদার ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। আদিতমারীর তিস্তার বাম তীরে সলেডি স্পার বাঁধ-১ এবং ২ এর মধ্যবর্তী অংশে এক মাস ধরে চলছে ভাঙন। ভাঙনের কবলে পড়ে ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় আছে সলেডি স্পার বাঁধ-২ এবং বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ (ওয়াপদা)। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভেঙে গেলে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি, বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েক হাজার পরিবার পড়বে ভাঙনের কবলে। এদিকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকায় তিস্তার ভাঙনে প্রতিদিনই বসতভিটা হারাচ্ছে মানুষ। গত এক সপ্তাহে ওই এলাকার ১৫০টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের সিংগিমারী গ্রামটি সম্পূর্ণ তিস্তায় হারিয়ে গেছে। ওই গ্রামের গৃহহীন মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সিংগিমারীর পাশেই অবস্থান বালাপাড়া গ্রামের। ভাঙন আতঙ্কে দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামবাসীর ত্রাহি অবস্থা। শুধু সিংগিমারী গ্রামই নয়, তিস্তার বাম তীরে পাঁচ উপজেলার প্রায় দেড় হাজার পরিবার গত দুই মাসে ভাঙনের শিকার হয়েছে। সরকারিভাবে পুনর্বাসনের জন্য এখন পর্যন্ত মাত্র ২০৭টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ কেউ কেউ বাড়িঘর এনে পার্শ্ববর্তী ঈদগাহ, স্কুলমাঠ ও রাস্তার পাশে স্তূপ করে রেখেছেন। জমির অভাবে ঘর তুলতে পারছেন না। ঈদগাহ কিংবা রাস্তার পাশে পলিথিন সাঁটিয়ে অনেকে দিন কাটাচ্ছেন। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ভাঙন ঠেকাতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পাউবো। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, এখন পর্যন্ত নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ২০৭ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য পরিবার প্রতি সাত হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর তালিকা করতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর