বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

১৬ উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাট

নামমাত্র কাজ করে অর্থ ভাগবাটোয়ারা

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

১৬ উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাট

দৌলতপুর উপজেলার তারগুনিয়া ফুটবল মাঠে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ফেলা হয়েছে দুই ট্রাক মাটি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রকল্পের নাম ‘তারাগুনিয়া ফুটবল মাঠে আঙিনায় মাটি ভরাট ও উন্নয়ন’। বরাদ্দ ১০ মেট্রিক টন গম। সরকারি হিসাবে যার বাজারমূল্য তিন লাখ ১০ হাজার টাকা। এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল গত ৩০ জুনের মধ্যে। কিন্তু এ পর্যন্ত ওই ফুটবল মাঠে মাটি পড়েছে মাত্র দুই ট্রাক। সে মাটিও মাঠের দুটি স্থানে স্তূপীকৃতভাবে পড়ে আছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পে এমন পুকুর চুরির অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় এমপির সুপারিশে উপজেলার বিভিন্ন অবকাঠামো সংস্কারে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬০ দশমিক ৫৫৫ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার স্কুলমাঠ, কাঁচা রাস্তা সংস্কারসহ মোট ১৬ প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার এ গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এ সব প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। প্রকল্প এলাকার মানুষের অভিযোগ, নামমাত্র কাজ করে সিংহভাগ অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) লোকজন ও প্রকল্প সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টরা। সরেজমিনে ঘুরে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মোজাম্মেলের বাড়ি থেকে জিল্লুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণের জন্য ৯ টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই মাসের শেষ দিকে ওই রাস্তার দু-এক স্থানে কয়েক ঝুড়ি করে মাটি ফেলা হয়েছে। এ প্রকল্পের সভাপতি বজলু মেম্বর দাবি করেন পিআইও অফিস থেকে ৯ টন গমের মূল্য হিসেবে দেড় লাখ টাকার মতো পেয়েছেন। গমের দাম এত কম কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পিআইও অফিসে তো কিছু খরচা দিতে হয়’। একই অবস্থা দৌলতপুর ইউনিয়নের দৌলতখালী গ্রামের আলতাবের বাড়ি থেকে হোসেনাবাদ অভিমুখী কাঁচা রাস্তা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের। ওই রাস্তার দুটি স্থানে মাত্র ১০-১২ ট্রলি মাটি ফেলা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এতে তিন থেকে চার হাজার টাকার বেশি খরচা হয়নি বলেও দাবি তাদের। অথচ এ প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ৯ টন গম। একই অবস্থা উপজেলার খাস মথুরাপুর গোরস্তানের আঙিনায় মাটি ভরাট প্রকল্পসহ বাকি প্রকল্পগুলোতেও। দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান দাবি করেন, কাজ না করে প্রকল্পের অর্থ নয়ছয়ের সুযোগ নেই। তিনি নিজে এ সব কাজ মনিটর করেন। তার দাবি প্রকল্পের সব অর্থ এখনো ছাড় করা হয়নি। কাজ দেখার পর এই অর্থ দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর