বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

আধুনিক সব ব্যবস্থা আছে তবু সুফল পাচ্ছে না মানুষ

শেরপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

শেরপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় তদন্ত হলে বন্ধ হয়নি দুর্নীতি-লুটপাট। চিকিৎসার নামে পকেট কাটা হয় রোগীর। সরকারি অর্থ বরাদ্দ, নিরাপদ বাচ্চা প্রসবের আধুনিক ব্যবস্থা সবই আছে এখানে। তবু মানুষ সুফল পাচ্ছে না। দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। কাজ না হওয়ায় এবারও ফেরত গেছে সরকারি বরাদ্দের টাকা। এ নিয়ে পরপর তিন বছর টাকা ফেরত গেল। একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য জন্য ওষুধ, আসবাবপত্র ও প্রতিষ্ঠানের সংস্কার দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দের অন্তত এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অর্থ নয়ছয়ে বাধার কারণে গত দুই বছর টাকা ফেরত গেছে সরকারি কোষাগারে। সবশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাড়ে চার লাখ টাকা ওষুধ ক্রয়ের জন্য আসে। ক্রয় কমিটির সভা করে কোটেশন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওষুধ কেনার নিয়ম। ওষুধ বুঝে নেবেন শেরপুর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। কিন্তু এ সব কিছুই করা হয়নি। অর্থবছরের শেষ দিন গত ২৮ জুন ভুয়া বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর করতে বলা হয় কমিটির সদস্য ডা. শারমিন রহমান অমিকে। অমি ওষুধ না পাওয়ায় স্বাক্ষর করেননি। কর্মচারিরা জানান, এভাবে প্রতি বছর শুধু টাকাই তোলা হয়। সরকার শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ার (ব্রেস্ট ফিডিং) কর্নার নির্মাণের জন্য ৮৫ হাজার টাকা দিলে তা খরচ দেখানো হয়েছে কিন্ত ওই কর্নার হয়নি। এখানে ব্যবস্থাপত্রের নামে চলে টেস্টবাণিজ্য। এক্ষেত্রে রোগী পাঠানো হয় নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। প্রসূতিদের পাঠানো হয় ক্লিনিকে। কমিশনের ভিত্তিতে চলে এ সব। অকেজো পড়ে আছে অপারেশন থিয়েটার। গত ২৩ মার্চ এখান থেকে প্রায় ছয় লাখ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জব্দ করা যায়। প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ডা. পিযুষ চন্দ্র সূত্রধর ও মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিয়ম মেনেই সরকারি বরাদ্দ খরচ করা হয়। কর্মকর্তাদের সঙ্গে রশি টানাটানিতে টাকা ফেরত গেছে। বাকি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোদাচ্ছের হোসেন জানান, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে দফতরে পাঠানো হয়েছে। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, জানা নেই।

সর্বশেষ খবর