সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তিন মাস পানিবন্দী শতাধিক পরিবার

ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌর এলাকা

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

তিন মাস পানিবন্দী শতাধিক পরিবার

পানিতে ডুবে গেছে বাড়ির আঙিনা ও সড়ক। নগরকান্দা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তোলা ছবি

ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবার তিন মাস ধরে পানিবন্দী অবস্থায় দিনযাপন করছেন। সামান্য বৃষ্টিতে তাদের ঘরে ঢুকে যায় পানি। ঘর থেকে বের হতে পারছেন না অনেকে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে নারী-শিশুদের। গভীর নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় খাবার পানির সংকট চলছে। নগরকান্দা পৌরসভার উপশহর হিসেবে পরিচিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এমন দুর্দশার প্রতিকার চেয়ে স্থানীয়রা বারবার পৌরকর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দীর্ঘদিন পানিবন্দী হয়ে মানবেতর দিনযাপন করায় পানি নিষ্কাশনে এগিয়ে এসেছে লন্ডন প্রবাসী স্থানীয় মিনারগ্রামের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান। তার প্রচেষ্টায় কয়েকদিন ধরে দুটি সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, নগরকান্দা পৌরসভার সবচে অবহেলিত ৭ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডটি পৌর কার্যালয় থেকে সামান্য দূরে হলেও নজর নেই কৃতপক্ষের। স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার কোনো সুযোগ-সুবিধাই পাচ্ছেন না তারা। এই ওয়ার্ডের কোথাও নেই লাইট পোস্ট। নেই ড্রেন ও পানির লাইন। রাস্তাগুলোরও বেহালদশা। ওই স্কুলশিক্ষক এসএম মোক্তার হোসেন বলেন, পৌরসভার নিয়মিত খাজনা-ট্যাক্স দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো উন্নয়ন নেই। ড্রেন না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে পানিতে সয়লাব হয়ে যায় গোটা এলাকা। তিনি বলেন, তিনমাস ধরে পানিবন্দী হয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এ ওয়ার্ডের বাসিন্দা নলিনি বাবু, কলেজছাত্র নয়ন, গৃহিণী চায়না বেগম বলেন, এখানকার মানুষ মনে হয় কোনো পাপ করেছে। এ করণেই মনে হয় দীর্ঘদিন ধরে ঘরবাড়িতে পানি থাকলেও তা সরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পচা পানির কারণে অনেকের শরীরে ঘা ও ফুসকা পড়েছে। পুস্তক ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা জানান, জলাবদ্ধতার কারণে এ ওয়ার্ডের মানুষ একপ্রকার বন্দী জীবনযাপন করছে। তিনি বলেন, একাধিকবার বলার পরও পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে তিনি এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তার আর্তি দেখে নগরকান্দার সন্তান লন্ডন প্রবাসী মাসুদুর রহমান এগিয়ে এসেছেন জলাবদ্ধতা নিরসনে। তারই নির্দেশনায় দুটি সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। আরও কয়েকদিন নিষ্কাশন কাজ করলে কিছুটা হলেও পানিবন্দী অবস্থা থেকে রেহাই পাবেন এ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে প্রতিবারই নানা অজুহাত দেখায়। নগরকান্দা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিমাই সরকার বলেন, মেয়রের মৃত্যুর পর তিনি গত মাসে দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস হওয়ার কারণে তিনি অফিস করতে না পারায় কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে ফান্ড না থাকায় এ মুহূর্তে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

সর্বশেষ খবর