শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

৪০ বছর পর এলো খুঁটি খবর নেই বিদ্যুতের

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

৪০ বছর পর এলো খুঁটি খবর নেই বিদ্যুতের

আশুগঞ্জের চরসোনারামপুর গ্রামে স্থাপন করা বিদ্যুতের খুঁটি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের একটি গ্রাম চরসোনারামপুর। এখনও এই গ্রামের ছেলে-মেয়েরা কুপি কিংবা মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করে। বিদ্যুতের জন্য ৪০ বছরের অপেক্ষার পর সম্প্রতি খুঁটি বসানো হয়েছে গ্রামটিতে। এরপর কয়েক মাস পার হলেও মেলেনি বিদ্যুৎ।

দেশে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন দেড় হাজারেও বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয় বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএমএম সাজ্জাদুর রহমান। দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হওয়ায় আশুগঞ্জকে বিদ্যুতের শহর বলা হয়। বিদ্যুতের শহরেই বিদ্যুতের জন্য হাহাকার।

জানা যায়, শত বছর আগে মেঘনা নদীর বুক চিরে জেগে উঠা গ্রাম চরসোনারামপুর। এই গ্রামে ৪০ বছর ধরে বসবাস করছে মানুষ। বর্তমানে এই গ্রামে ছয় হাজারের বেশি মানুষের বাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষই মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। শিশুদের জন্য চরেই রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হলেও যুগের পর যুগ বিদ্যুতের অভাবে অন্ধকারে রয়ে গেছে গ্রামটি। গরমের সময় চরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। চরের বাসিন্দা অনীল চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমাদের চরবাসীকে বিদ্যুৎ না দিয়েই আশুগঞ্জকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি জানান, ৪০ বছরের অপেক্ষার পর ছয় মাস আগে বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়েছে। চরসোনারামপুর গ্রামের বৃদ্ধ প্রজাপতি রাণী বর্মণ বলেন, ৪০ বছর আগে এই চরে বসতি গড়েছি। তখন থেকেই শুনছি বিদ্যুৎ আসবে। টাকা-পয়সা নেই তাই সৌরবিদ্যুতও আনতে পারি না। চরের বাসিন্দা প্রিয়া বালা জানান, গরমে সারারাত ঘুমাতে পারি না। নদীর পাড়ে গিয়ে বসে থাকি। রেবতী বর্মণ নামে আরেক বাসিন্দা জানান, সরকার দয়া করে আমাদের বিদ্যুৎ দিলে ৪০ বছরের কষ্ট দূর হবে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আশুগঞ্জ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, চরসোনামারপুর গ্রামটি নদীর মাঝখানে হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবল দিয়ে সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

সর্বশেষ খবর