বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

হত্যা মামলা ঘিরে লুটপাট অবরুদ্ধ নারী-শিশুরা

গ্রেফতারের ভয়ে গ্রামছাড়া পুরুষ সদস্যরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের শরণখোলায় হত্যা মামলা ঘিরে লুটপাটে জড়িয়ে পড়েছে বাদীপক্ষ। আসামির স্বজনদের অবরুদ্ধ করে রাখাসহ তাদের ঘেরের মাছ, বাড়ির মাল, খড়ের গাদা লুট ও দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভয়ে দিন কাটছে পুরুষশূন্য ওইসব পরিবারের নারী-শিশুদের। কেউ তাদের পক্ষে কথা বললে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত শনিবার ঘটনাস্থল শরণখোলা উপজেলার পূর্ব ধানসাগর গ্রামে গেলে এ সব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পুলিশ বলছে, অবরুদ্ধ বা লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট পূর্ব ধানসাগর গ্রামে ছাগলের গায়ে কাদা মাখানোর জেরে চাচাতো ভাইদের সঙ্গে সংঘর্ষে জাকির জমাদ্দার (৫৩) মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী জাকিরের তিন চাচাতো ভাই মন্টু, সেন্টু, সেলিম, মন্টুর স্ত্রী শিল্পী, সেন্টুর স্ত্রী মাসুমা, মন্টুর শ্যালক সোহেল ও মিলনের বিরুদ্ধে পরদিন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় শিল্পী ও মাসুমা জেলহাজতে রয়েছেন। অন্য আসামিরা পলাতক। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আসামি সেলিমের বাড়িতে তার স্ত্রী নাছিমা ও কুয়েত প্রবাসী ছেলের বউ জান্নাতী, দুই বছরের নাতী আরাফাতকে নিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া অন্য আসামিদের বাড়িতে লোকজন নেই। সবার ঘরে তালা। একজন পুরুষও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেলিম জমাদ্দারের বাড়ির সামনে তার দোকানও তালাবদ্ধ। সেলিমের স্ত্রী নাছিমা জানান, বাড়িতে পুরুষ নেই। ছেলের বউ আর নাতী নিয়ে থাকি। ভয়ে রাতে ঘুমোতে পারি না। নিহত জাকিরের ভাই হুমায়ুন বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। দুটি গরু গোয়ালেই না খেয়ে পড়ে আছে। মামলার বাদী শিউলী তাদের দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। এতে বিভিন্ন মাল পচে যচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে হুমায়ুন বলেন, আমরা কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখি নাই। কে কার ঘেরের মাছ, বাড়ির মালামাল নিচ্ছে আমরা জানি না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন বলেন, আমি চাই হত্যার বিচার হোক। এখানে আসামিদের নিরীহ লোকজনকে হয়রানি করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শরণখোলার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুর রহমান শেখ লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর