শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

কবিরাজের খপ্পরে মানুষ

হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা, ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে ভন্ড মহিলা কবিরাজের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন হাজারো মানুষ। এ ঘটনায় প্রতারণার স্বীকার লোকজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, বড়াইগ্রাম উপজেলায় বিনা বেগম নামে এক নারী দীর্ঘদিন ধরে সংসারে অশান্তি, বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণ, পছন্দের মানুষকে পাইয়ে দেওয়া, অবাধ্য সন্তানকে বশে আনা, পক্ষঘাতসহ নানা সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছিলেন। এ কাজে তার কাছে থাকা জিন তাকে সহযোগিতা করে বলে তিনি রোগীদের বোঝান। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আসন বসান নিজ বাড়িতে। যারা তার কাছে আসেন তাদের কারো বাড়িতে শত্রুতাবশত তাবিজ, কারো বাড়িতে শামুক বা গাছ পুঁতে রাখা আছে এবং এ কারণেই সমস্যায় ভুগছেন বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে জিনের সাহায্যে তাবিজ বা গাছ তুলে এনে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এ জন্য এক হাজার ৭৮০ টাকা ফি নেন। এরপর বাড়ি বন্ধ করার জন্য ৫০০, তাবিজ বাবদ ৩০০ এবং জনপ্রতি ২০ টাকা করে নজরানা নেন। সম্প্রতি চিকিৎসা নিতে যাওয়া উপজেলার খোকশা গ্রামের নাসরিন জানান, আমি বিনার চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলাম। আমাকে একটি তাবিজ দেন। এতে কাজ না হওয়ায় তাবিজ খুলে দেখি ভিতরে শুধু দুটি শিমুলের বিচি। দিঘলকান্দি গ্রামের শ্রাবন্তী জানান, আমি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বিনার কাছে চিকিৎসা নিতে যাই। তিনি আমার বাড়িতে প্রতিপক্ষের পুঁতে রাখা তাবিজ তুলে দেওয়া এবং শরীর বন্ধ করার তাবিজ বাবদ দুই হাজার ৮০ টাকা নেন। কোনো কাজ না হওয়ায় তাবিজ খুলে দেখি তার ভিতরে কিছুই নেই, শুধু মোম দিয়ে আটকানো। একই অভিযোগ করেন আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী। এ ব্যাপারে কথা              বলার জন্য বিনা বেগমের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। স্বামী লোকমান হোসেন জানান, প্রতারণার বিষয়টি সঠিক নয়, তবে আমি তাকে এই চিকিৎসা বন্ধ করতে বলেছি। বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, আমি মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাদের প্রতারণা বন্ধ করতে বলেছি। কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর