বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ১৩টি পদের মধ্যে মেডিকেল অফিসার ও ফার্মাসিস্টসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। ফলে ব্যাহত হচ্ছে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা। অপরদিকে দির্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ভবন। দোতলার সিলিং ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। অধিকাংশ দরজা ও জানালার গ্লাস ভেঙে গেছে। ব্যবহারের প্রায় অনুপযোগী এ স্বাস্থ্যভবনে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ১৯৮৯ সালে বার্থী বাজার সংলগ্ন এলাকায় বার্থী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। বার্থী, খাঞ্জাপুর ও রাজিহার ইউনিয়নের একাংশের মানুষ দৈনন্দিন স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, গর্ভবতী মা ও শিশুর চিকিৎসা, প্রসব ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানে এই কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য করিম লস্কর জানান, এই কেন্দ্রে এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগ দিলেও গ্রামাঞ্চল হওয়ায় যোগদানের পরই তারা বদলি বা প্রেষণে অন্যত্র চলে যান। মেডিকেল অফিসারসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। বার্থী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. তোফাজ্জেল হোসেন জানান, এই কেন্দ্রে দির্ঘদিন ধরে মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট ও তিনজন পরিবার কল্যাণ সহকারী পদ শূন্য। ভবনের অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। সংকটের ব্যাপারে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও প্রতিকার মিলছে না। ওই কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শিরিনা মমতাজ জানান, জরাজীর্ণ ভবনটি নাজুক হয়ে পড়েছে। উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. তোফাজ্জেল হোসেন এবং তিনি (শিরিনা) ঝুঁকি নিয়ে ভবনের দোতলার কোয়ার্টারে বসবাস করে আসছিলেন। গত বছর অক্টোবরে দোতলার সিলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়ে। বারান্দার গ্রিল ভেঙে পড়েছে। বর্ষায় ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। ভবনটি এখন বাসের অনুপযোগী। বাধ্য হয়ে তারা কোয়ার্টার ছেড়ে নিজ বাড়িতে থাকছেন। বর্তমানে ভবনটিতে রাতে কেউ থাকেন না। জরাজীর্ণ ভবন ও জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ভবনটি মেরামত করতে যা ব্যয় হবে তার চেয়ে পুনর্নির্মাণ করলে ভাল হবে। ভবন পুনর্নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
