রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বাগাতিপাড়ায় অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং, ঘটছে দুর্ঘটনা

নাটোর প্রতিনিধি

বাগাতিপাড়ায় অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং, ঘটছে দুর্ঘটনা

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার রেলপথে ১০টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে সাতটি অরক্ষিত। এসব রেলগেটগুলোতে গেটম্যান নেই। আবার কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। ফলে ওইসব উন্মুক্ত রেলগেট দিয়ে যানবাহন এবং লোক চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই ঘটছে প্রাণহানি। অরক্ষিত এসব লেভেল ক্রসিংগুলো হলো স্বরূপপুর, ঠেঙ্গামারা, মাড়িয়া নিংটিপাড়া, মাড়িয়া, হাড়ডাঙ্গী, মালিগাছা ও গাঁওপাড়া। জানা গেছে, উপজেলার সীমানার মধ্যে মালঞ্চি ও লোকমানপুর নামের দুটি রেলস্টেশন রয়েছে। উপজেলার মাঝ বরাবর আব্দুলপুর হতে পার্বতীপুর অভিমুখে মালঞ্চি রেলস্টেশন এবং আব্দুলপুর হতে রাজশাহী অভিমুখে রয়েছে লোকমানপুর রেলস্টেশন। মালঞ্চি স্টেশনের দুই পাশে রয়েছে ৫টি লেভেল ক্রসিং। এর মধ্যে মালঞ্চি, ইয়াছিনপুর ও বড়পুকুরিয়া তিনটি রেলগেটে অনুমোদিত গেটম্যান রয়েছে। বাকিগুলোর কোনটিতেই গেটম্যান নেই। আর লোকমানপুর স্টেশনের দুই পাশের ৫টি লেভেল ক্রসিংয়ের সবগুলোই উন্মুক্ত এবং অরক্ষিত। ওই সব রেলগেট ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহন এবং লোকজন ওইসব পথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সাধারণ পথচারী ছাড়াও ওইসব পথের বেশ কয়েকটি দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে। রেলগেট সংলগ্ন এলাকাবাসীরা জানান, প্রায় ৫ বছর পূর্বে ইয়াছিনপুর রেলগেট পারাপারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় ভটভটির দুর্ঘটনায় নববধূসহ ৩ জন নিহত হয়। বড় পুকুরিয়া রেলগেটে পারাপারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় চার বছর আগে মৃত আতাহার আলী সরকারের ছেলে রাজ্জাক আলী সরকার নামের একজন নিহত হন। মাড়িয়া নিংটিপাড়া রেলগেটে চিথলিয়া গ্রামের ফজিলা নামের এক গৃহবধূ কাটা পড়েন। মাড়িয়া রেলগেটে গরু নিয়ে পারাপারের সময় ধাক্কায় মকছেদ নামের এক কৃষকসহ ওই রেলগেটে কয়েক বছরে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রায় আট থেকে নয়জন নিহত হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৩ জুলাই অজ্ঞাত ব্যক্তি এই গেটে কাটা পড়েন। এর দুদিন আগে আইয়ুব আলী নামের একজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান।

 এছাড়াও হাড়ডাঙ্গী রেলগেট সংলগ্ন চা দোকানদার জমসেদ জানান, বছর দুয়েক পূর্বে তার চোখের সামনে পারাপারের সময় এক ট্রলি চলন্ত ট্রেনের ধাক্কা খায়। তাতে থাকা চালকসহ অন্যরা ছিটকে পড়েন। এতে মৃত কুরবান আলী সরকারে ছেলে আব্দুল খালেক সরকার নামের একজন মারা যান।

তাছাড়াও ওই গেটে প্রায় প্রতিবছরই যানবাহনসহ পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হন। এছাড়াও এসব রেলগেট পারাপারের সময় নসিমন, খাবারের গাড়ি, সাংবাদিকদের মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন যান রেলের ধাক্কা খেয়ে বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাওয়ার তথ্য মিলেছে।

নাটোর রেলস্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বলেন, রেলের গেটের একটি তালিকার বই রেল দফতরের কাছে রয়েছে। ওই সাত রেলগেট ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কিনা যাচাই করে দেখে তিনি ঊর্ধ্বতন বরাবর জানাবেন। তবে পায়ে হাঁটা বা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বের গেটগুলোতে রেলের পক্ষ থেকে নিজ দায়িত্বে সতর্কতার সঙ্গে পারাপারের ব্যাপারে সাইনবোর্ড দেওয়া আছে।

সর্বশেষ খবর