লালমনিরহাটে আমন ধানখেতে মাজরা পোকা, ধান গাছ কেটে দেওয়া কারেন্ট পোকা ও ধান গাছের মাজা খাওয়ার পাপড়ি পোকার আক্রমণে দিশাহারা হয়েছে কৃষক। এসব পোকার আক্রমণের কারণে এবার এখানে ফসল উৎপাদান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এর ফলে তাদের পারিবারিক খাদ্য জোগানের সংকট দেখা দিতে পারে এমনটিই আশঙ্কা করছেন তারা। জানা যায়, এবার লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় পরপর পঞ্চম দফার বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায় নি¤œাঞ্চলের কৃষকের আমন ক্ষেত। অনেক চেষ্টা চালিয়েও পরিবারের খাবারের প্রধান মাধ্যম ধানখেত রক্ষা পারেনি এখানকার কৃষক। নি¤œাঞ্চলে বন্যায় আমন ধান খেত নষ্ট হলেও উঁচু স্থানের আমন খেত নষ্ট হয়নি। কিন্তু বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে এখানে বড় ধরনের বৃষ্টি না হয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে খরা বিরাজ করায় আমনখেতে দেখা দেয় তীব্র পোকার আক্রমণ। পোকার আক্রমণে এখানকার সবুজের আমন ধানখেত এখন সাদা হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো ধানখেত আগুনের পোড়ার মতো রঙ ধারণ করেছে। এখানকার ভুক্তভোগী কৃষকরা স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ না পেলেও বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির শরণাপন্ন হচ্ছেন। কৃষকরা ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে তারা খেতে ওষুধ স্প্রে করে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তবে ওষুধ স্প্রে করে কারও সীমিত কাজ হলেও আবার কারও কাজেই আসছে না। মহিষখোচা ইউপির বালাপাড়া গ্রামের কৃষক অনিল চন্দ্র বর্মণ বলেন, তাদের ৭ বিঘা আমন খেতে মাজরা পোকা, ধান গাছ কেটে দেওয়া কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ এখনো তারা পাননি। তিনি বলেন, বায়ার ওষুধ কোম্পানির লোকজন তাদের খেত দেখে তাদের কোম্পানির ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শে তিনি এখন তার আমন খেতে ওষুধ স্প্রে করছেন। তবে এসব খেতে ধানের উৎপাদন তেমন ভালো হবে না। লালমনিরহাট পৌর এলাকার নয়ারহাট গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, কৃষকের এবার শান্তি নেই। দফায় দফায় বন্যায় আমন ধান বাঁচানোর চেষ্টা করে নাজেহাল হয়েছি। বন্যার পর আমন খেতে মাজরা পোকা, ধান গাছ কেটে দেওয়া কারেন্ট পোকা ও ধান গাছের মাজা খাওয়ার পাপড়ি পোকার আক্রমণে আমরা এখন দিশাহারা। তিনি আরও বলেন, এবার আমন ফসলের উৎপাদন ভালো না হলে পারিবারিক খাদ্য সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছি। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, লালমনিরহাটে বর্তমানে রাতে কুয়াশা ও দিনে রোদের কারণে আমন ধানের গোড়া স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় ধানখেতে পোকার আক্রমণ হচ্ছে। এ রোগ সম্পর্কে সচতেনতা ও  প্রতিষেধক ব্যবস্থার লিফলেট কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।