সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

শত বছর ধরে খাবার বিতরণে আকবরিয়া

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

শত বছর ধরে খাবার বিতরণে আকবরিয়া

শহরের নাম-পরিচয়হীন অভাবী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছিলেন মরহুম আকবর আলী মিয়া। তার পথ অনুসরণ করে শত বছরের বেশি সময় ধরে এখনো অভাবী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করে চলেছে আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেলের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ আকবর আলী মিয়া ভারতের মুর্শিবাদ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ভাগ্য অন্বেষণে সপরিবারে বাংলাদেশের পাকশি, সান্তাহার এবং পরে বগুড়ায় আসেন। স্বাধীনচেতা আকবর আলী মিয়া ভাইয়ের সঙ্গে মেকানিকের কাজ শুরু করেন। ওই সময় বগুড়া শহরে মুসলমানদের খাবারের কোনো হোটেল ছিল না। হিন্দু সম্প্রদায়ের হোটেলে আবার মুসলমানরা যেত না। আবার হিন্দুরা তাদের হোটেলের আসবাবপত্র মুসলমানদের ছুঁতেও দিত না। এখান থেকেই তিনি হোটেল করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন। কিন্তু হোটেল করার প্রয়োজনীয় অর্থ ছিল না। হোটেলের পুঁজির জন্য নিজে মিষ্টি তৈরি করে ফেরি করে বিক্রি শুরু করেন। মিষ্টি বিক্রির কিছু পুঁজি নিয়ে ১৯১১ সালে বর্তমান শহরের চকযাদু রোডের মুখে মাসিক ৮ টাকা ভাড়া দিয়ে একটি হোটেল শুরু করেন। সেখান থেকেই শুরু। পরে শহরের (বর্তমান) থানা রোডে হোটেলটি স্থানান্তর করেন। যা বর্তমানে আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল হিসেবে পরিচিতি পায়। মরহুম আকবর আলী মিয়ার ছোট ছেলে ও আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হাসান আলী আলাল জানান, ১৯১১ সালে হোটেলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হোটেলের আয় দিয়ে বাবা প্রথম দীনহীন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাবার সেই নিয়ম পালন করে যাওয়া হচ্ছে। এই খাবার বিতরণের জন্য প্রতিদিন এক মণেরও বেশি চাল আলাদাভাবে রান্না করে বিতরণ করা হয়। রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে হোটেলের সামনের রাস্তায় সে খাবার বিতরণ করা হয়। এই ছিন্নমূল মানুষগুলো আমাদের পরিবারের অংশের মতো। প্রতিদিন আমরা যা খাই তাদের জন্যও একই খাবার দেওয়া হয়। রাতে নিজের পরিবার নিয়ে খাবার মুখে দেওয়ার আগে মুসাফিরদের খাবার দেওয়া হয়েছে কিনা সে খবর নিয়ে খেতে বসেন। মূলত খাবারটি বিতরণ শুরু হয়েছিল মুসাফিরদের জন্য। কালক্রমে মুসাফিরের জায়গায় এখন দীনহীন মানুষকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, যে কেউ খাবার নিতে পারে।

সর্বশেষ খবর