চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সুপেয় পানির সংকট নিত্য ঘটনা। চরম মুমূর্ষু রোগীদেরও পানির জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে অনেককে কিনে পানি খেতে হয়। তবে হাসপাতালে পানি সংকট নিরসনে উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবায়ন নেই। তা ছাড়া পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসাও কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে।
অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসা নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং নগরের বাইরে দূরে পানি সরবরাহের পরিকল্পনার কথা বলছে। অথচ নগরের প্রাণকেন্দ্র চকবাজারে অবস্থিত বৃহত্তর চট্টগ্রামের বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের রোগীদের পানির জন্য হাহাকার চলছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, যেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পানি সরবরাহের কথা, সেখানে পানির সংকট থাকে। একই সঙ্গে বৃহত্তর হালিশহরসহ নগরের অনেক এলাকায়ও পানির সংকট নিয়মিত।
জানা যায়, প্রায় সাত বছর আগে আখতারুজ্জামান বাবু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হাসপাতালের তিনটি ফটকের পাশে বসানো হয় বেশ কয়েকটি পানির ট্যাংক। যা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এগুলো অকেজো পড়ে আছে। এর পর থেকে শুরু হয় সুপেয় পানির সংকট। বর্তমানে হাসপাতালে গভীর নলকূপ ও ওয়াসার সংযোগের মাধ্যমে পানির সংস্থান হচ্ছে।রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে চলছে সুপেয় পানির সংকট। কোন পানি বিশুদ্ধ, কোন পানি ময়লা, কোন পানি ভালো, তা পার্থক্য করার সুযোগ নেই। বিশুদ্ধ পানি খুঁজতে হলে না খেয়ে মরতে হবে। তা ছাড়া প্রতিদিন পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও তাদের নেই বলে জানান।
মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজন কামরুল হাসান বলেন, ‘সাত দিন ধরে হাসপাতালে আছি। প্রতিদিনই পানি কিনে খেতে হচ্ছে। কিন্তু সবার তো আর এ সক্ষমতা নেই। হাসপাতালের অধিকাংশ রোগীই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির। এত বড় হাসপাতালে রোগীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা উচিত।’
চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, ‘সংকটের ব্যাপারে ওয়াসার সঙ্গে কথা হয়েছে। ওয়াসা বলছে সংযোগ লাইনগুলো মেরামত করে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। আশা করি, প্রয়োজনীয় উদ্যোগের মাধ্যমে পানির সংকট কেটে যাবে।’
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘হাসপাতালে ওয়াসার প্রয়োজনীয় সংযোগ আছে। তবে পানির সংকট যেটা সেটা অভ্যন্তরীণ সরবরাহ পাইপলাইনে। সমস্যাগুলো ইতিমধ্যে তাদের চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া হাসপাতালের আরও সংযোগ লাইন দরকার হলে তাও দেওয়া যাবে। আমরাও চাই, রোগীরা নিয়মিত পানি পান।’